বাঙালি জাতির অস্তিত্বে যে নাম চিরঞ্জীব

: চামেলী খাতুন
প্রকাশ: ৯ মাস আগে

আজ ১৭ মার্চ, জাতীয় শিশু দিবস। বাঙালির জীবনে বসন্তের লাল কৃষ্ণচূড়ার সাথে রক্তজবার মতো রক্তঝরা মার্চের তাৎপর্য বুঝতে আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে। বাংলাদেশ নামক একখণ্ড শব্দ এবং বাঙালি জাতির মুক্তির বার্তা যিনি বয়ে এনেছিলেন তিনি ব্রিটিশ শাসিত ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষের এই ভূখণ্ডে মার্চের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ই মার্চ (৩রা চৈত্র ১৩২৭ বঙ্গাব্দ) রাত ৮টায় তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার, গোপালগঞ্জ মহকুমার, পাটগাতি ইউনিয়নের, বাইগার নদী তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা লুৎফর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুন এর ছয় সন্তানের মধ্যে শেখ মুজিব ছিলেন তৃতীয়। আদর করে বাড়ির সবাই তাঁকে খোকা বলে ডাকতেন। তিনি শেখ বংশের গোড়াপত্তনকারী শেখ আউয়াল দরবেশ আল-বগদাদী সাহেবের বংশধর।
কৃষিপ্রধান গ্রামবাংলার মাটি ও মানুষের আর দশজন শিশু কিশোরের মতোই গ্রামীণ জনপদে বেড়ে উঠেছিলেন ছোট্ট খোকা শেখ মুজিবুর রহমান।বাইগার নদীটি তাঁর জন্মভিটার পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে এবং তিনি এই নদীর তীরে জীবনের সোনালি দিনগুলো পার করেছেন।চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে ছোটবেলায় তিনি বেশ চঞ্চল এবং দুষ্টু প্রকৃতির ছিলেন। খেলাধূলা, গান করা এবং খুব ভালো ব্রতচারী হিসেবেও সুখ্যাতি ছিল বলে জানা যায়। লেখাপড়ার হাতেখড়ি বাবা শেখ লুৎফর রহমানের কাছেই; তাঁদের পূর্বপুরুষদের নির্মিত গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু হয়। তাঁর গৃহশিক্ষক ছিলেন আবদুল হামিদ; যক্ষ্মা রোগে তাঁর মৃত্যুর পরে ‘মুসলিম সেবা সমিতি’ নামে একটি সেবামূলক সংগঠনে শেখ মুজিব বেশ কিছুদিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
বাইগার নদীর জলে ঝাঁপাঝাঁপি, মেঠোপথের ধূলিবালি মাখা জীবনের সাথে তিনি ওতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে ছিলেন। মাছরাঙার ডুব দিয়ে মাছ ধরা দেখা, দোয়েল পাখির বাসা খুঁজে বের করা ছিল তাঁর নিত্যকাজ। আর দশজন ছেলের মতো অন্য ছেলেদের সাথে মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়ানো, লাটিম ডাঙ্গগুলি খেলা, পাখির ছানা, মাছধরা, বানর ও কুকুর পালন ছিল প্রিয় কাজ। প্রকৃতির নিবিড় আলিঙ্গনে থেকে তিনি পশুপাখির প্রতি অসম্ভব ভালোবাসার সাক্ষর রেখেছেন। পোষা প্রাণীর প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত যত্নশীল। ছোট থেকেই ফুটবল, ভলিবল ও হকি খেলতেন। কিন্তু তখন তিনি সেইভাবে রাজনীতি সচেতন ছিলেন না। শোনা যায় তিনি মধুমতী নদী পার হয়ে চিতলমারী ও মোল্লারহাঁটে প্রতিযোগিতায় ফুটবল খেলতে যেতেন। শৈশবে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ১৯৩৬ সালে কোলকাতায় গ্লুকোমা রোগের চিকিৎসা নেন। ১৯৩৭ সালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে ভর্তি হন। বারো-তেরো বছর বয়সেই তিনি বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ডাকনাম রেনুর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
তাঁদের বাড়িতে আনন্দবাজার, বসুমতী, আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী ও সওগাত পত্রিকার ব্যাপক পরিচিতি ছিল এবং তিনি ছোটকাল থেকে এসব পত্রিকার মাধ্যমে দেশ, দেশের মানুষের অবস্থা, মূলত পরাধীন ভারতবর্ষের গ্লানি, হতাশা অনুভব করতেন এবং রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরিতে এসব পত্রিকা পরবর্তীতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। তদানীন্তন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং খাদ্যমন্ত্রী ও পরবর্তীকালে বাংলা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ঐ বছরই বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। ঐ সময় বিদ্যালয়ের ছাদ সংস্কারের দাবি নিয়ে একটি দল তাঁদের কাছে যায় এবং দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্বয়ং শেখ মুজিব। তিনি ওই সময় থেকেই রাজনীতি সচেতন হয়ে ওঠেন;তাছাড়া তিনি ছোটকাল থেকেই অত্যন্ত মানবদরদী এবং অসহায়ের প্রতি সহমর্মিতার দৃষ্টান্ত রেখে বেশ পরিচিতি লাভ করেন। নিগৃহীত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়ে তৎপর হন ছোটবেলা থেকেই এবং সাধারণ মানুষের প্রতি, গরিব-দুখীর জন্য তাঁর অন্তরের দরদ মাখা অনুভূতি লক্ষ করা যায়। একবার অতি বৃষ্টিতে কৃষকের ফসল নষ্ট হলে বাবাকে বুঝিয়ে ধানের গোলা থেকে ধান নিয়ে গরিব কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেন। তাছাড়া বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাল, অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করে অসহায়দের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন। এরূপ অনেক জনকল্যাণমুখী কাজের উদাহরণ আছে যা তিনি অসহায় মানুষদের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য করতেন। শীতের দিনে একবার তিনি নিজের গায়ের চাদর এক শীতবস্ত্রহীন ব্যক্তিকে দিয়ে এসেছিলেন। গ্রীষ্ম বা বর্ষায় তাঁর জন্য অনেকগুলো ছাতা কিনতে হতো;কারণ তিনি কোনো মানুষকে রোদবৃষ্টিতে কষ্ট পেতে দেখলে নিজের ছাতা দিয়ে আসতেন।
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রথমবারের মতো গ্রেফতার করা হয় ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরে। ৭ দিন হাজতবাস করার পর তিনি ছাড়া পান।তারপর রাজনৈতিক জীবনের পরতে পরতে অসংখ্যবার কারাগারে বন্দী হয়ে পরিবার পরিজন ছাড়া দীর্ঘ জেল জীবন অতিবাহিত করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি গোপালগঞ্জ মহকুমা মুসলিম ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি এবং মহকুমা মুসলিম লীগের ডিফেন্স কমিটির সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন (এনট্র্যান্স) পাশ করে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সংঘটিত হলে মুসলিম ছাত্রদের জীবন রক্ষা করতে তাঁর অবদান ছিল অভূতপূর্ব।
১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের পর থেকে তিনি আরও বেশি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। কারণ দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশবিভাগের প্রারম্ভেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে কতটা বৈষম্যের শিকার হতে হবে বাঙালিকে। বাঙালির মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ে ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলনে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল এবং তখন তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগে যোগদান করেন। ভাষা আন্দোলনে জনমত গঠন, সভাসমাবেশ করে মানুষের মধ্যে ভাষার প্রতি সচেতনা সৃষ্টি এবং নানাবিধ কর্মপরিকল্পনা গ্রহন করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং রাষ্ট্র ভাষা বাংলা করার দাবি আদায়ে তাঁর ভূমিকা ছিল অনন্য। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট গঠনের সময় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আতাউর রহমান খান প্রমুখের সান্নিধ্যে জাতীয় রাজনীতির সাথে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের সাম্প্রদায়িক মতাদর্শ থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ গঠনের মাধ্যমে তাঁর স্বতন্ত্র রাজনৈতিক চেতনা ও দার্শনিক ভাবনা প্রকাশ পায়।
পাকিস্তানি শাসকদের নানা বৈষম্যমূলক আচরণ তাঁকে বিচলিত করে প্রথম থেকেই এবং তিনি সাধারণ জনগণের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সচেষ্ট হন এবং জনপ্রিয়তার স্বর্ণশিখরে আরোহন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবির আন্দোলনে নিরঙ্কুশ জনসমর্থন লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে অবৈধ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রুখে দেন। ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে শেখ মুজিবের ডাকে সাড়া দিয়ে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অসহযোগ আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং আন্দোলন সফল হয়।১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সক্ষম হয়। কিন্তু পাকিস্তানি কুচক্রীমহল আওয়ামী লীগকে যথাসময়ে সরকার গঠন করতে দেয়নি এবং নানাভাবে সরকার গঠনে গড়িমসি করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশ নামক একখণ্ড কবিতার সেই মর্মবাণী চারিদিকে ধ্বনিত হয়Ñ ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। এই দেশকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’ তাঁর বজ্রকণ্ঠের উদাত্ত এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপামর বাঙালি স্বাধীনতার মন্ত্রে জাগ্রত হয়ে ওঠে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ, ঘুমন্ত ও নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাক-হানাদার বাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে ওই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে এবং গ্রেফতারের আগে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। পরেরদিন ২৬ মার্চে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান। তারপর শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের যুদ্ধে প্রায় ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহিদ হন এবং অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা, বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র; আর পেয়েছি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ এবং সুসজ্জিত মহাকাব্য সৃষ্টিতে তাঁর চিন্তা ও রাজনৈতিক জীবনদর্শনের বহিঃপ্রকাশ। যার ছায়াতলে দাঁড়িয়ে আমরা বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখেছি।
১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এবং ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ আ স ম আব্দুর রব পল্টন ময়দানের এক জনসভায় তাঁকে জাতির জনক উপাধি প্রদান করেন। পরবর্তীতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম প্রথম স্থানে উঠে আসে। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। বিংশ শতাব্দীর এক বিস্ময় পুরুষ তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা।বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বীকৃত প্রদানকালে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে ‘বাংলাদেশের জনক’ নামে আখ্যায়িত করেন। আর এভাবেই তিনি সাত কোটি বাঙালির চেতনার এলবাম থেকে একজন চিরঞ্জীব অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে ও তাঁর রাজনৈতিক জীবনদর্শন দ্বারা বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে মহিমান্বিত রূপে অধিষ্ঠিত করেছেন। শোষিতের গণতন্ত্র, তাঁর রাজনৈতিক তত্ত্বের উত্থান, বাংলার মাটি থেকে তা বৈশ্বিক রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিশেষ আবেদন সৃষ্টিতে অনস্বীকার্য।
নদীনালা বেষ্টিত ছায়াশীতল গ্রামবাংলার মাটি মানুষের নয়নের মণি, বাবা-মা, ভাই-বোনের আদরের ছোট্ট খোকা নিজের বক্ষদেশে লালন করতেন একটা স্বাধীন দেশ ‘বাংলাদেশ’ নামক এক মহাকাব্য এবং এই রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা তিনি। যে শিশুর কিশোর বয়স থেকেই স্বতন্ত্র ভাবনা ও যাঁর রাজনৈতিক জীবনদর্শনে বাঙালির মুক্তির সনদ লেখা ছিল সেই ছেলেই জাতির শ্রেষ্ঠসন্তান। সেই হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাঙালির আভিজাত্যের অহংকার।তাঁকে ঘিরেই বাঙালি এখনো টিকে থাকার লড়াইয়ে সামিল হয়। সোনার মাটিতে সোনার ছেলের জন্ম দিবস বাঙালির এক গৌরব ও ঐতিহ্যের ধারক। শিশু-কিশোরদের জীবনমান উন্নয়ন ও গঠনে তাঁকে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় করে গড়ে তোলা একটা আদর্শ রাষ্ট্রের যুগান্তকারী সংযোজন।
বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা, তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ উত্তরসূরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পরে ১৯৯৬ সালে তৎকালীন মন্ত্রিসভা ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং ১৯৯৭ সাল থেকে দিনটি ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে শিশু কিশোরদের নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হয়ে আসছে। আর এই দিনটি ‘জাতীয় শিশু দিবস’-এর মর্যাদা পেয়ে বাঙালি জাতিকে আরও বেশি গৌরবের আতিশয্যে ভরিয়ে তুলেছে।
তাঁর জীবনাদর্শে লালিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সুদূরপ্রসারী চিন্তা ও সুষ্ঠু পরিকল্পনা দ্বারা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে এবং বাঙালি জাতিকে সারা পৃথিবীর বুকে স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি হিসেবে পরিচিত করতে তাঁর নিরলস চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের প্রতি আহবান জানাব, সকল অপশাসনের বিরুদ্ধে থেকে অন্যায়,অবিচার, অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতির বলয় থেকে বেরিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গঠনে সচেষ্ট হন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন।

লেখক : কবি ও কলামিস্ট

#