‘ও ডাক্তার/ তুমি কতশত পাস করে এসেছো বিলেত ঘুরে মানুষের যন্ত্রণা ভোলাতে/ তোমার এমবিবিএস না, না এফআরসিএস বোধহয় অ্যা টু জেড ডিগ্রি ঝোলাতে’ ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর এই গানটি উপমহাদেশের চিকিৎসাসেবার ব্যঙ্গাত্মক প্রতিচ্ছবি। সম্পূর্ণ গানটিতে অনৈতিক উপায়ে অর্থ উপার্জনের নানাদিকের উল্লেখ থাকলেও একজন ডাক্তারের জ্ঞান-গরিমা, মেধা ও ডিগ্রি নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। একজন ডাক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে অভিযোগ উঠলে সাধারণ রোগী হিসেবে যে কেউই দুশ্চিন্তায় পড়বে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও বারবার ঘুরেফিরে দোল খাচ্ছে। নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ানো মুনিয়া খান রোজা নামক এক তরুণীর নাগরিক টিভিতে দেওয়া সাক্ষাৎকারটি অনেকেরই দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যেখানে দেখা যায় উপস্থাপিকার সহজ ও সাধারণ প্রশ্নের মনগড়া উত্তর দিচ্ছে ওই তরুণী। যেমন ওয়েন্টমেন্ট মানে টেবলেট। OT, ICU এর উল্টাপাল্টা পূর্ণরূপ প্রদান। Prescription-এর উচ্চারণে ফিক্সিশন বলা। কেস সামারি শুদ্ধরূপে পড়তে না পারা ইত্যাদি। প্রাথমিক অবস্থায় মুনিয়া খান রোজার উদ্দেশ্য ডাক্তার সেজে টিকটক ভিডিও তৈরি করা হলেও পরবর্তীতে সে উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয় প্রতারণায়। বর্তমানে মেধাহীন একটি গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে। তারা যেকোনো উপায়ে ভাইরাল হতে চায়। অপকর্ম ও মিথ্যাচার তাদের ভাইরাল হওয়ার সহজবোধ্য উপাদান। শুধু ভাইরাল হওয়ার বাসনায় তারা মগজহীন কন্টেন্ট বানায়। সেসব কন্টেন্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে। হোক অবান্তর, হাস্যকর কিংবা লজ্জাজনক কন্টেন্ট তা দেশব্যাপী ব্যপক প্রচার হলে তাদের আর আনন্দের সীমা থাকে না। তাই ভুয়া ডাক্তার হিসেবে ধরা খেয়ে কারাবাস বরণ করেও টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে মুনিয়া খান রোজার বিন্দুমাত্র লজ্জা অনুভূত হয় না। কেননা উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার বিভিন্ন সংবাদ থেকে বুঝা যায় কিভাবে ভুয়া ডাক্তারের সূচনা হয়। প্রথমদিকে এরা কোনো ওষুধের দোকানে কাজ নেয়। এরপর কোনো প্রকৃত ডাক্তারের সহকারী হিসেবে কিছুদিন কাজ করে। ফার্মেসি বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ছোট চেম্বারগুলোতে ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে রোগীদের সাথে দেখা-সাক্ষাতের মাধ্যমে এক সময় রোগীদের কাছে ভরসাযোগ্য ব্যক্তি হয়ে ওঠে। কষ্ট করে হলেও তারা কিছু ওষুধের নাম মুখস্থ করে রাখে। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন রোগের ওষুধ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা লাভ করে। ওই ধারণা আর নীলক্ষেত থেকে বানানো ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে খোলে বসে প্রাইভেট ক্লিনিক। স্বীয় নামের ব্যানারে সাজিয়ে নেয় নিজস্ব চেম্বার। আবার কোনো কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ইচ্ছা করেই ভুয়া ডাক্তার নিয়োগ দেয়। সেখানে তারা অতি অল্প বেতনে চাকরি করে। রোগ পরীক্ষার নামে ব্যবসা করে। দালালির মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করে। এরকম হাজারো ভন্ডামির মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে একসময় ভুয়া ডাক্তার থেকে নামকরা ডাক্তার হয়ে যায়। মেডিক্যাল সেন্টারগুলোতে গলায় স্টেথোস্কোপ আর গায়ে সাদা অ্যাপ্রোন জড়ানো থাকলেই যে কেউ ডাক্তার হয়ে যায় না। তারপরও প্রতারক চক্রের অনেককেই ডাক্তার ভেবে ভুল করে বসে রোগীর আত্মীয় স্বজনরা। পরিবারের কোনো সদস্য গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর প্রয়োজন হয়। ওই পরিস্থিতিতে রোগীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনরা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়। হাসপাতালে এত এত মানুষের ভিড়ে তারা নিজেদের অসহায় মনে করে। এই সুযোগটাই কাজে লাগায় অ্যাপ্রোন পড়া ভুয়া ডাক্তারের দল। ডাক্তার সেজে মানুষের সাথে প্রতারণার ঘটনা নতুন নয়। প্রতারণা করার জন্য কেন এ মহান পেশাকে বেছে নেওয়া হয়? কারণ একটাই, তা হলো প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তার সংকট। ডঐঙ এর নির্দেশনা অনুযায়ী একটি দেশে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ডাক্তারের অনুপাত হওয়া উচিত ১০০০ : ১ জন। জাতিসংঘ স্বীকৃত ১৯৩টি স্বাধীন দেশের মধ্যে ৫৬ শতাংশ দেশ বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত অনুপাত মেনে চলে। বাংলাদেশসহ বাকি ৪৪ শতাংশ দেশে জনসংখ্যার তুলনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তারের ঘাটতি রয়েছে। জনসংখ্যার অনুপাতে বাংলাদেশে কম করে হলেও এক লক্ষ আটাত্তর হাজার ডাক্তার থাকা উচিত। বর্তমান বাংলাদেশে আড়াই হাজার মানুষের জন্য একজন ডাক্তার রয়েছে যা বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত অনুপাতের তুলনায় অতি নগণ্য। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সরকারি-বেসরকারি হিসেব মিলিয়ে দেশে সাকুল্য ডাক্তার ৭২ হাজার। এর মধ্যে ১৯/২০ হাজার সদ্য পাশ করা নবীন অনভিজ্ঞ ডাক্তার। আর সরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছে মোটে ২১ হাজার ডাক্তার। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের ৫৮ ভাগ মানুষ মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। কেননা এসব মানুষের মধ্যে কেউ কেউ সেবার প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে গ্রাম্য কবিরাজি চিকিৎসা ও ঝাড়ফুঁক। আবার অনেকেই এলাকার ওষুধের দোকানদারদের দ্বারস্থ হয়। এছাড়া হাটে বাজারে ঘুরে বেড়ানো হাতুড়ে ডাক্তারের নিজস্ব চিকিৎসা ব্যবস্থা তো আছেই। যার মানে হলো এরা কেউই নিবন্ধিত চিকিৎসকের সেবা পান না। সে জন্যই এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামনে স্টেথোস্কোপ আর সাদা অ্যাপ্রোন পরিহিত যে কেউ অতি সম্মানের ব্যক্তি। আবার একজন ডাক্তার যে পরিমাণ সম্মান ও অর্থ উপার্জন করতে পারে তা স্পর্শ করা অন্য কোন পেশায় কর্মরত একজন ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব না। এই বিষয়গুলোই মুলত একজন প্রতারককে ডাক্তার সেজে প্রতারণা করার প্রতি উৎসাহিত করে।
দেশের হাসপাতালগুলোতে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা নিয়ে নৈরাজ্য চলে। একজন রোগী কেন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন? এই প্রশ্নের অতিসহজ উত্তর হলো রোগযন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য। রোগব্যাধির কবল থেকে রেহাই পাওয়া দূরে থাক যদি ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর জীবনাশঙ্কাই প্রকট হয়ে ওঠে তাহলে কে যে প্রকৃত দক্ষ ডাক্তার, কে হাতুড়ে ডাক্তার আর কে ভুয়া ডাক্তার তা কে খুঁজে বেড়াবে?
চিকিৎসাখাত মূলত সেবাখাত এবং অন্যতম একটি মৌলিক অধিকার হচ্ছে চিকিৎসা। একটি দেশ কতটা উন্নত তা ওই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার চিত্র দেখলেই বোঝা যায়। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের এই উন্নয়ন যথেষ্ট নয়। বিশ্বজুড়ে যুগেযুগে চিকিৎসা গবেষকরা চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করেছে। প্রাগৈতিহাসিকযুগে চিকিৎসাশাস্ত্র ছিল মূলত আধ্যাত্মবাদ। পশুদেহের বিভিন্ন অংশ আর উদ্ভিদের ছাল বাকলই ছিল পথ্য। মিশরীয়, বেবিলনিয়, আয়ুর্বেদিক, প্রাচীন গ্রিক, রোমান ও ক্ল্যাসিক্যাল চীনা ওষুধের উপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের এক্সপেরিমেন্ট রিপোর্ট থেকে জানা যায় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি ছিল অনুমান নির্ভর। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের প্রাচীনতম মিশরীয় চিকিৎসক ইমহোতেপ-এর শাস্ত্রীয় গ্রন্থমতে তৎকালীন মিশরীয় চিকিৎসা পাঠ্যক্রমটি কাহুন গাইনোকোলজিক্যাল প্যাপিরাস নামে পরিচিত ছিল। এটি মূলত গাইনোকোলজিক্যাল রোগের বর্ণনা দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। ১৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এডউইন স্মিথ নামক একজন স্বাস্থ্য গবেষক প্যাপিরাস সার্জারির উপর প্রথম কাজ করেন। ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চিকিৎসা সংক্রান্ত পাঠ্যপুস্তকের অনুরূপ হিসেবে Ebers Papyrus নিয়ে কাজ করা হয়। ব্রোঞ্জ যুগের প্রাচীন চৈনিক রাজা শং-এর শাসনামলের একটি মেডিক্যাল পাঠ্য হচ্ছে হোয়াংদি নেইজিং। যা থেকে মানব অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত পথ্য সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। অস্ত্রোপচারের প্রাচীনতম রূপের বর্ণনা পাওয়া যায় ভারতীয় শল্যচিকিৎসক শুষ্রুতের গবেষণা থেকে। মধ্যযুগে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে বিংশ শতাব্দীতে এসে চিকিৎসা ব্যবস্থার আধুনিকায়ন সম্ভব হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণের চিত্র দেশভেদে ভিন্নতর। উন্নত ও ধনী দেশের নাগরিক যেরকম চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকে তুলনামূলক অনুন্নত তথা দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর নাগরিকরা সে ধরনের চিকিৎসা সেবা পায় না। এমনও দেশ আছে যে দেশে হাসপাতালই নেই। চিকিৎসা সেবা পেতে তাদেরকে বাধ্য হয়েই অন্য দেশে পারি জমাতে হয়।
বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা বর্তমান আওয়ামী সরকারের নিপুণ ছোঁয়ায় ভালোই গতি পেয়েছে। সীমাবদ্ধতা থাকলেও গত ১৬ বছরে স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। যেমন নির্মিত হয়েছে নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল। নির্মিত হয়েছে স্নাতকোত্তর সুপার বিশেষায়িত হাসপাতাল। নির্মিত হয়েছে বক্ষব্যাধি হাসপাতাল। নির্মিত হয়েছে কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতাল। নির্মিত হয়েছে ক্যানসার হাসপাতাল। সারাদেশে এরকম ৬২৫টিরও বেশি হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে। আপামর জনসাধারণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৮ হাজার ৬০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৪৩টি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হয়েছে। মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে ৩১ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিক চালু আছে। সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে ৩০ রকম ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। ৫ লাখ অটিস্টিক শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ১০৩টি সেবাকেন্দ্র চালু আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশকে পোলিও ও ধনুষ্টংকারমুক্ত দেশ ঘোষণা করেছে। প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। দেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসুরক্ষা অর্জনে আশাব্যঞ্জক সফলতা হাতছানি দিচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকার ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক সকল ভালো কাজ মলিন হয়ে যাবে যদি চিকিৎসা ব্যবস্থার আড়ালে লুকিয়ে থাকা থলের বেড়ালের রহস্য উদঘাটন না হয়, যদি চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি বন্ধ না হয়, যদি ডাক্তার পরিচয় দেওয়া ভন্ড প্রতারকদের শাস্তির আওতায় আনা না হয়।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ এর ধারা ২৮(৩) ও ২৯(২) অনুযায়ী একজন ভুয়া ডাক্তারের সাজা হিসেবে ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়ের বিধান রয়েছে। এ শাস্তি পর্যাপ্ত নয়। ভুয়া ডাক্তারের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন হওয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করেন। এ ব্যাপারে আদালতে রিটও করা আছে। চিকিৎসা পেশা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএমডিসি চিকিৎসকদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালানোর অনুমতি বা নিবন্ধন দিয়ে থাকে। বিএমডিসির অফিসিয়াল তথ্যানুসারে দেশে নিবন্ধনহীন ক্লিনিক যেমন আছে তেমনি অসংখ্য ভুয়া ডাক্তারও রয়েছে। কে প্রকৃত ডাক্তার আর কে ভুয়া সেটা কে খোঁজে বের করবে? প্রশ্ন থেকেই যায়। চিকিৎসা সেবাদান অত্যন্ত মানবিক পেশা। চিকিৎসা ব্যবস্থার বিপর্যয় রোধে কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কেবল অর্থ উপার্জনের আশায় ডিগ্রিহীন কোনো ভুয়া ডাক্তার যেন এ পেশায় ঢুকতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করতে হবে। সেবাদান পেশায় নিয়োজিতদের দায়িত্ববোধের ঘাটতি দূরীকরণে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসাকেন্দ্রের নামে ব্যাঙের ছাতার মত ‘বাণিজ্যকেন্দ্র’ নির্মাণ বন্ধে জাতীয় সংসদে আইন পাশ করতে হবে। প্রতিটি চিকিৎসাকেন্দ্রের জন্য নির্দিষ্ট অনুশাসন ও শৃঙ্খলাবিধি প্রদান করতে হবে। ভুয়া ডাক্তার সনাক্তকরণে বিশেষ টিম গঠন করতে হবে। চিকিৎসাক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সঙ্গে সঙ্গেই দৃষ্টান্তমূলক প্রতিকার নিশ্চিত করতে হবে। তবে আর কেউই বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতিতে খলনায়কের ভূমিকা পালন করতে পারবে না।
লেখক : শিক্ষক ও সংগঠক