হেঁটে যাচ্ছি জীবনের পথ ধরে। দু’পাশে ফুটে আছে মৃত্যুফুল। মৃত্যুর ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে চারপাশ। চাঁদের রূপোলী আলোর মরীচিকা— ধুলোবালি ওড়া পথে। জলের স্রোতে ভেসে যাচ্ছে এইসব রাতদিন, মৃত সময়। প্রেমখচিত দেয়ালিকার হিজিবিজি লেখায় জটিলতা, দুর্বোধ্যতা। রাত্রিকালীন কালো জলভরা দীঘির পাড়ে নিঃশব্দ একটা কাক বসে থাকে। দৃশ্যমান সবকিছু মিলিয়ে যায় কালো রঙের নেকাবে। জীবনের আশ্রয় কি ফুটন্ত সব দুঃখে, অফুরন্ত কষ্টে! জানালার বাইরে শ্যাওলা পড়া দেয়াল। গা ঘিনঘিনে কুৎসিত এক দৃশ্যের জলছাপ। ওপারে বৈদ্যুতিক থামে ঝুলছে আত্মহত্যার ঝকঝকে পোস্টার! তখনো বুক-শেলফে খিলখিলিয়ে হাসছে, মৃত্যু বিষয়ক উপন্যাসের বই, বুকে ছুরি বসানোর দেয়ালিকা।
মনে চায়— শ্রাবণের না-বলা কোনো সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করি। রক্তে ভিজে যাবে পিচঢালা রাস্তা, একা একা ঝুলে থাকবো। দিনশেষে নিঃসঙ্গ কাকটা এসে দেখবে— তার সাথে হিসাব-নিকাশ করতে অপেক্ষায় কেউ নেই! চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে মৃত্যুফুলগুলো দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করবে, ভুল মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে। তখন জানতে পারবো— মৃত্যুরও সুবাস আছে, আছে তার কোমল আলিঙ্গন! অথচ আমি পড়ে আছি অনুতপ্ত লাশের ভাগাড়ে, হাড্ডিসার বিকৃত হওয়া কোনো গুহায়। দুঃখগুলো ডানা ঝাপটে ফুরুৎ করে উড়ে যাবে পৃথিবীর বাগানে। কেউ সঙ্গ দেবে না, এমনকি মৃত্তিকাও! মানুষ জানতে পারবে— কিছু মৃত্যু ফুল এবং কিছু মৃত্যু ভুল!