প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ থাইল্যান্ডকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের পাশাপাশি বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুবিধায় বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাঁকে (থাই প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা সুবিধায় বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এখানে থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও একান্ত বৈঠকের পরে, পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে।
বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সাথে সম্পর্কের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে নিহিত। আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখেন বলে জানান শেখ হাসিনা।
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে, তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালি দ্বিমুখী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে, ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষরিত হয়েছে। জনগণের জন্য খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, রণং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিংলাইন নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে। বাংলাদেশ অত্যন্ত আগ্রহের সাথে থাইল্যান্ডের ফ্ল্যাগশিপ ‘ল্যান্ডব্রিজ প্রকল্প’, তিনি অব্যাহত রাখেন। দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি।
দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।
এর আগে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন অভ্যর্থনা জানান এবং এরপর সেখানে থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের উন্মুক্ত স্থানে তাঁকে লালগালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন করেন।