দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন একবারে অতীষ্ঠ হয়ে উঠছে। সর্বত্র প্রচণ্ড খরতাপ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবনসহ প্রাণিকুল অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বৈশাখের এই গরমে উপকূলীয় প্রাণ ওষ্ঠাগত। অপরদিকে, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, পানির অপর নাম জীবন হলেও এই পানি এখন এ উপজেলার মানুষের বিপদ ডেকে আনছে। চারদিকে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার চলছে।
পানির জন্য কলসি হাতে দূর-দূরান্তে ছুটছে মানুষ। সুপেয় পানির সংকট এ অঞ্চলের মানুষদের নিত্যদিনের সমস্যা।গত কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা চলে এলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, এটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন কৈখালী, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালীনি, আটুলিয়া, গাবুরা মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
তারা আরও জানান, এলাকার বেশিরভাগ খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় কোথাও গোসল এবং খাবারের পানি মিলছে না। ফলে লোকজনকে আর্সোনিকযুক্ত নলকূপ ও নোংড়া পুকুরের পানি পান করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষজন এ পানি পান করে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভুগছেন।
শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায় প্রচন্ড গরমে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, শাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে কৈখালী গ্রামের দেখা যায়- শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে হচ্ছে ভর্তি।
কৈখালী গ্রামের পল্লী চিকিৎসক রুহুল আমীন বলেন, একদিকে অতিতাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায়, অন্যদিকে এই এলাকার মাটির তলদেশের ও নলকূপের পানি নোনা এবং অপরিকল্পিতভাবে পুকুরগুলো সংস্কার করার অভাবে পানিবাহিত ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ বয়সের মানুষ।
উপকূলীয় সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন ইয়ুথ ফ্রেন্ডশিপের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, আমাদের বিশ্বাস সরকারি-বেসরকারি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সরকারি খাল-বিল, জলাশয়গুলো ভূমিদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার করে বিশুদ্ধ পানির পুকুর সংস্কার করে পিএসএফ তৈরি করলে সুপেয় পানির সংকট অনেকটা কেটে যাবে।