নির্মাণশৈলীর অনন্য নিদর্শন অক্সফোর্ড মিশন চার্চ

: মোহাম্মদ আলী যোহেব, বরিশাল
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

মসজিদ-মন্দির-গির্জা ধর্মীয় স্থাপনা, এগুলোর স্থাপত্যশৈলী যেকোনো ধর্মের মানুষের মনকে আকর্ষণ করে। এশিয়া মহাদেশের ২য় বৃহত্তম গির্জাটি বরিশালে। গির্জাটির নাম ইপিফানি গির্জা হলেও অক্সফোর্ড মিশন নামেই পরিচিত। এই গির্জার কারুকাজ, নির্মাণশৈলী, ভেতরের নান্দনিক আবহ সবার মনকে এক মহাজাগতিক দিকে ধাবিত করে- কিছুক্ষণের জন্য হলেও।

লাল ইটের গির্জাটি সিস্টার এডিথের নকশায় মূল আকৃতি দেন ফাদার স্ট্রং। ১৯০৩ সালে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় আর শেষ হয় ১৯০৭ সালে। ১১৩ বছর পুরনো এ গির্জাটি শুধু সুন্দরই নয়, দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পুরাকীর্তিগুলোর একটি। এটি ‘লাল গির্জা’ নামেও পরিচিত। একতলা গির্জার মূল প্রার্থনাকক্ষটির আয়তন প্রায় ৫০ ফুট। এ কাঠামোর প্রধান প্রকৌশলী ফ্রেডেরিক ডগলাস।

মূলত গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এ গির্জার প্রধান আকর্ষণ বিশাল ও নান্দনিক প্রার্থনাকক্ষ। এর ছাদ কাঠের তৈরি, আর ফ্লোরে সুদৃশ্য মার্বেলের টাইলস। মূল বেদীর উপর একটি বড় ক্রশ স্থাপিত আছে। এমন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের গির্জা আর দুটি চোখে পড়ে না।


চল্লিশটি খিলানের উপরে এ গির্জাটি দাঁড়িয়ে। ৩৫ একর জমির উপরে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। তেরটি ছোট-বড় পুকুর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আবাসিক ছাত্র হোস্টেল, ফাদার ও সিস্টারদের আবাসন, পাঠাগার ও হাসপাতাল নিয়ে এ চার্চটি অবস্থিত। দিনে সাত বার এশিয়ার সবচে বড় ঘণ্টা এ চার্চেই বেজে ওঠে। সুদৃশ্য ঘণ্টার নিচেই চার্চের ছোট্ট অফিস।

১৯০৩ সালে এ চার্চের প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয় ও একই বছর ২৬ জানুয়ারি এটি উদ্বোধন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপের কাজ ১৯০৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। লাল ইট দিয়ে নির্মিত শতবর্ষী এ চার্চ চমৎকার রক্ষণাবেক্ষণের সুবাদে ঝকঝকে ও সুদৃশ্য।
গির্জাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এর স্থাপত্যশৈলী বিনষ্ট না হয়। ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়েও গির্জাটি সম্পূর্ণ অক্ষত থেকে যায়।

#