খেলাপি ঋণ হ্রাসে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে জোরের নির্দেশ

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

ব্যাংকখাতের খেলাপি ঋণ কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি উপর (এডিআর) জোর দিতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক) বা এ-জাতীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা পরিপত্রে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ও মধ্যস্থতার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায় বৃদ্ধির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআর অনুসরণের মাধ্যমে ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সব ব্যাংকের খেলাপি ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১ শতাংশ নগদ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করতে ব্যাংকের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং প্রতি ষাণ্মাসিকে অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ-বিষয়ক অগ্রগতির পরিস্থিতি উপস্থাপন করতে হবে।

এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ে আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এ আইন অনুসারে আদালত রায় বা আদেশ প্রদানের আগে মামলার যেকোনো পর্যায়ে উভয়পক্ষের আদালতের অনুমতিক্রমে বিকল্প পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তির সুযোগ রয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তি বাড়াতে চার দফা নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এগুলো হল- খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য জারি করা নোটিসে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বা সদিচ্ছাকে বিবেচনায় নিয়ে কেস টু কেস ভিত্তিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা। ব্যাংকার ও গ্রাহক উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়াকসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে তালিকাভুক্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী, অথবা অন্য যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তি যাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সফলতার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে তাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্বাচিত করা। মধ্যস্থতাকারী নিযুক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিরোধীয় পক্ষ ও মধ্যস্থতাকারী পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে পারিশ্রমিকের পরিমাণ, পরিশোধকারী পক্ষ নির্ধারণ ও যথাসময়ে তা পরিশোধ নিশ্চিত করা।  মধ্যস্থতাকে সফল করা এবং খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিদ্যমান নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংক কর্তৃক ছাড় প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা।

প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর বাইরে আরো ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার খেলাপিযোগ্য ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। খেলাপি ও পুনঃতফসিলকৃত ঋণকে ‘স্ট্রেসড’ বা ‘দুর্দশাগ্রস্ত’ হিসেবে দেখায় আইএমএফ। এ হিসাবে দেশের ব্যাংকগুলোর ‘দুর্দশাগ্রস্ত’ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৩ কোটি টাকায়।

#