এমপি আনার হত্যা : বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রেপ্তার যারা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৭ মাস আগে
ছবি : নিহত এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনায় ঢাকায় যে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, তাঁদের একজনের নাম সৈয়দ আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া। । তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান ওরফে সিনথিয়া রহমান গ্রেপ্তার হয়েছেন। তানভীর হলেন শিমুল ভূঁইয়ার বড় ভাই লাকী ভূঁইয়ার ছেলে। এদিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ বলছে, এই খুনের জন্য সৈয়দ আমানুল্লাহকে ভাড়া করা হয়েছিল। আমানুল্লাহর প্রকৃত নাম শিমুল ভূঁইয়া। তিনি খুলনা অঞ্চলের কুখ্যাত সন্ত্রাসী, এক সময়কার চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) অন্যতম শীর্ষ নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে খুনসহ ২৫টির মতো মামলা আছে। ঢাকায় ধরা পড়ার পর পুলিশের কাছে শিমুল ভূঁইয়া নিজেকে সৈয়দ আমানুল্লাহ নামেই পরিচয় দেন। আমানুল্লাহ নামে করা পাসপোর্টে তিনি কলকাতায় গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকা থেকে পাসপোর্টটি করা হয়েছিল। এছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন তানভীর ভূঁইয়া। তানভীর হলেন শিমুল ভূঁইয়ার বড় ভাই লাকী ভূঁইয়ার ছেলে।

শিলাস্তি রহমান নামে যে নারী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁর বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। তার বাবা থাকেন পুরনো ঢাকায়। শিলাস্তি একাই উত্তরায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতেন । ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিলাস্তি এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত– এমন তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। আর এমপি আনারকে নিউ টাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে আনতে ব্যবহার করা হয় শিলাস্তি রহমান এই নারীকে। শিলাস্তি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া ফয়সাল আলী ওরফে সাজী নামে একজনের আটকের খবর বুধবার বের হয়েছিল। পরে জানা যায়, তিনি গ্রেপ্তার হননি। তবে এই হত্যাকাণ্ডে তাঁরও সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুলকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তাঁর একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের আক্তারুজ্জামান। তিনি আরেক চরমপন্থি  সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) শীর্ষ নেতা ডা. মিজানুর রহমান ওরফে টুটুলের আত্মীয়।

ভারতে যারা গ্রেপ্তার :

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

ভারতের সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে জিহাদ হাওলাদার এক ব্যক্তিকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী এবং পেশায় তিনি কসাই। অবৈধভাবে মুম্বাইয়ে বাস করতেন তিনি।

সিয়াম নামের একজনকেও গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ বলছে, আনোয়ারুল আজীমের লাশ গুম করার ক্ষেত্রে সিয়ামের ভূমিকা ছিল। এছাড়া জুবের নামের এক গাড়িচালককে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ।

জিহাদ হাওলাদারকে বারাসত আদালতে তোলা হবে। হত্যাকাণ্ডের তথ্যের খোঁজে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জিহাদকে হেফাজতে নেওয়ার চিন্তা করছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীরা জানান, জিহাদ হাওলাদার অবৈধভাবে মুম্বইয়ে বসবাস করত। পেশায় কসাই। মনে করা হচ্ছে, আখতারুজ্জামান তাকে ঘটনার দুমাস আগে কলকাতায় নিয়ে আসে। এরপর সংসদ সদস্য আনোয়ারুলকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। আখতারুজ্জামান জেরায় স্বীকার করেছে, ফ্ল্যাটে চারজন মিলে আনোয়ারুলকে হত্যা করা হয়। সেখানেই তার দেহাংশ থেকে হাড় এবং মাংস আলাদা করা হয়। এ খুনের ঘটনায় সিয়াম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ বলছে, আনোয়ারুল আজীমের লাশ গুম করার ক্ষেত্রে সিয়ামের ভূমিকা ছিল। তাঁকে পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এছাড়া জুবের নামের এক গাড়িচালককে আটক করেছে কলকাতা পুলিশ। আনোয়ারুল ও তাঁর খুনিরা যেসব ভাড়া গাড়িতে চড়েছেন, তার একটির চালক জুবের। তাঁকেও নিউ টাউন থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ সূত্র বলছে, জুবের ভারতের নাগরিক। অন্যদিকে সিয়াম বাংলাদেশের নাগরিক বলে ইঙ্গিত পুলিশের।

#