মেধা বা ট্যালেন্টই এ যুগে ধনী হবার একমাত্র সোপান। যদিও আমাদের এ সোনার বাংলায় এই চর্চা নেই বললেই চলে। বাংলাদেশের মতো আর কোনো দেশে ট্যালেন্ট বা মেধাকে উপেক্ষার বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় কিনা জানি না। কোথাও হলেও তা কিন্তু কখনোই সফল হয় না। প্রতিভা শুধু পলতেটায় আগুন লাগাবার অপেক্ষা করে এবং এ যুগে প্রতিভার বিস্ফোরণকে কেউ ঠেকাতে পারে না। প্রতিভা কোনো জাত-পাতের বিচার করে না। বয়স বিচার করে না। প্রতিভার লিঙ্গভেদ নেই। মুক্ত দুনিয়া বলে- ‘হয় সমৃদ্ধ হও, না হয় শেষ হয়ে যাও’ (Either Prosper or Perish)।
প্রত্যেকটি মানুষই প্রতিভাবান। শুধু পরিমাণের তফাত। তাই সেটিকে মেনে নাও। প্রতিভা সৃষ্টি করা যায় না। কিন্তু তার গুণগত মান আরও উন্নত করা যায়। এজন্য ইচ্ছা চাই, উদ্যম চাই, সৃষ্টিশীলতা চাই, লেগে থাকার ক্ষমতা চাই। এ গুণগুলো থাকলে নিজের জন্য, পরিবারে জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য, সর্বোপরি বিশ্বমানবতার জন্য বিন্দুমাত্র হলেও কিছু একটা করে যাওয়া যায়। আর প্রতিভা দিয়েই , মেধা দিয়েই মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করার মধ্যে রয়েছে এক অনন্য সার্থকতা, বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।
তাই জন্মগত প্রতিভা থাকলেই হয় না, কর্মগত প্রতিভারও দরকার হয়। কঠোর পরিশ্রম চাই, সাংগঠনিক দক্ষতা চাই। প্রতিভাও পণ্য- এ এক নান্দনিক পণ্য (Ornamental Commodity), সৃজনশীল পণ্য। একটি শ্রেষ্ঠ পণ্যকেও শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ড পজিশনিং-এর দ্বারা উন্নততর করে তুলতে হয়। তাই ধনী হতে গেলে সাংগঠনিক উদ্যম লাগে। এ কথা যেমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে সত্যি, লেখক-লেখিকা, কবি-সাহিত্যিক, রক শিল্পী, খেলোয়ার, অভিনেতা-অভিনেত্রী, সবার ক্ষেত্রেও তা সত্যি। তাই বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় এখন প্রতিভাবানরাও আছেন; আছেন লেখকশিল্পী, ক্রীড়াবিদ, বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ।
তাই আমাদের একই সঙ্গে ধনী ও নান্দনিকতার যোগসূত্র বুঝতে হবে, ধনীর সঙ্গে প্রতিভার যোগসূত্র অনুধাবন করতে হবে, সৃষ্টিশীলতা, সৃজনশীলতা ও প্রতিভার মাঝেই ধনীর হওয়ার আসল গুপ্তধন লুকিয়ে আছে।
লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান, শেরে বাংলা ফাউন্ডেশন