প্রকৃতি ও মানুষের সহজাত সম্পর্ক এক অপার মহিমা। কৃতজ্ঞতা মানবের অপরিহার্য জীবনধর্ম। কিছু নিলে তাকে দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেওয়াই প্রকৃতির নিয়ম। নদী, সমুদ্র, মহাসাগর এমন কি একটি খানাডোবাও তার জল বাষ্প আকারে পাঠাচ্ছে আকাশকে। আকাশ তা বৃষ্টির মধ্য দিয়ে দ্বিগুণ করে ফেরত পাঠাচ্ছে পৃথিবীকে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ শুধু নেয়, কিছু দেয় না। আবার কিছু কিছু মানুষ উপকারীকেই হত্যা করে।
কৃতজ্ঞতাহীন মানুষ পশুর চেয়ে অধম। কারণ পশুদের মধ্যে কৃতজ্ঞতাবোধ মানুষের চেয়ে বেশি। সিংহের খাঁচায় যে লোকটি খাবার পোঁছে দেয়, তাকে সিংহ কোনোদিন আক্রমণ করে না। কিন্তু মানবশিশু বড় হয়ে তার গর্ভধারিণী মা ও যে তাকে শিক্ষা দিয়ে বড় করে তুলল সেই বাবাকেই ভুলে যায়। রাজনীতিতে অকৃতজ্ঞ মানুষরাই সমৃদ্ধ হয়। সেখানে বাবাকে হত্যা করে ছেলে, ভাই ভাইকে খুন করে, ছেলে মাকে বন্দি করে। কিন্তু ইতিহাস দেখিয়েছে কোনো কৃতঘ্ন বেশিদিন রাজ্যসুখ ভোগ করতে পারেনি। মূল্যবোধহীন সমাজ অকৃতজ্ঞতা, দুর্নীতি, চুরি, চরিত্রভ্রষ্টতা ও মিথ্যাচারকে প্রশ্রয় দেয়। প্রকাশ্যে অন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রকৃতির বিচার তাদের ক্ষমা করে না। তাদের বিনাশ অনিবার্য করে তোলে প্রকৃতি।
যদি আল্লাহতায়লা, পরলোক, পাপ-পুণ্য বিশ্বাস নাও করেন, প্রকৃতির বিচারে আস্থা না রেখে উপায় নেই, কারণ তা বিজ্ঞান। নির্বিশেষে প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে গেলে প্রকৃতি সে সমাজকে ধ্বংস করে। প্রলয় অনিবার্য হয়ে ওঠে, উঠছেও।
লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান, শেরে বাংলা ফাউন্ডেশন