বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেছে

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৬ মাস আগে

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত ঐতিহাসিক ৬ দফা বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। ৬ দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। ৬ দফাকে কেন্দ্র করেই স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ নামক দেশের সৃষ্টি হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ আয়োজিত ঐতিহাসিক ৬ দফা উপলক্ষে ‘বাঙালির স্বাধীনতার মহাসনদ ৬ দফা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মুখ্য আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল  নাসের চৌধুরী বলেন, বাঙালির ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্বে কোনো নেতার সার্বভৌমত্ব ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দুইভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। প্রথমত সার্বভৌমত্ব হচ্ছে ব্যক্তির সার্বভৌমত্ব এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব। যেটি ৭ মার্চের ভাষণে আমরা দেখেছি। ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু অনেকগুলো দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। বাঙালি কিন্তু সেই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু মুকুটহীন রাজা ছিলেন। অর্থাৎ তখন বঙ্গবন্ধু ক্ষমতাসীন ছিলেন না। কিন্তু বাঙালি তাঁর কথা পালন করেছেন। সেদিন শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো পৃথিবী অসাধারণ সার্বভৌমত্ব অবলোকন করেছেন। ৩৫টি দিকনির্দেশনা বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন, সবগুলো বাঙালি পালন করেছেন। ব্যক্তি সার্বভৌমত্ব সৃষ্টি হওয়ার ইতিহাস পৃথিবীতে আর নেই।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই ৬দফার মাধ্যমে মানুষকে এমনভাবে তৈরি করেছেন যারা ধাপে ধাপে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। বাঙালির ইতিহাসে এমন নেতা আর সৃষ্টি হয়নি আর হবেও না। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান রাষ্ট্রে বিশ্বাস করতেন না। তাঁর বিশ্বাস ছিল বাঙালির জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র। সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম আর ত্যাগ স্বীকার করেছেন বঙ্গবন্ধু।

৬ দফা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির মহাসনদ জানিয়ে ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রণীত ৬ দফা দল থেকে জনগণের সম্পত্তিতে পরিণত হলো। বঙ্গবন্ধু বললেন, ৬ দফার দাড়ি, কমা, সেমিক্লোন পরিবর্তন করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু ৬ দফা এমনভাবে প্রণয়ন করেছেন যেখানে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র নিহীত ছিল। কাজেই ৬দফা ছিল বাঙালি জাতির জাতীয় মুক্তি তথা স্বাধীনতা অর্জনের মহাসনদ।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতির পিতার পথ এতোটা কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ৬ দফা প্রণয়নের সময়ও তাঁর নিজ দলের বিরোধিতা ছিল। বঙ্গবন্ধু তা দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে বাঙালির জাতিসত্তার ভিত্তিতে যে জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টি করলেন তার পেছনের মূল শক্তি ছিল ৬ দফা। হাজার বছরের ধারাবাহিকতায় আর কোনো রাজনীতির কবি, আর কোনো কাব্যের কবি, অন্য কোনো পণ্ডিতজন কেউ এতোটা আগলে ধরে এই সংস্কৃতির প্রধান বাহনকে এতোটা সমন্বয় করতে পারেনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান। আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নাসিমা বানুসহ ইনস্টিটিউটের ডিস্টিংগুইশসড অধ্যাপক, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক প্রমুখ।

  • ছয় দফা
  • #