ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক ব্যবহারমুক্ত ও সংস্কারে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া কনস্টেবল শোয়াইবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় শোয়াইবুর রহমানের (৩২) সঙ্গে নায়েক সজিব সরকারকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম জানিয়েছেন। ওসি সোমবার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসামি শোয়াইবুর রহমান ও সজিব সরকার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করে আসছিলেন। এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে শাহজাহানপুর থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
এদিকে ডিএমপির এক খুদে বার্তায় বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার করে পারস্পরিক যোগসাজশে বিভিন্ন শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ও ঘৃণা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ জনসাধারণের প্রতি সেবাদান বাধাগ্রস্ত করতে উসকানিমূলক মন্তব্য ও বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে শাহজাহানপুর থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় নায়েক সজীব সরকার ও কনস্টেবল শোয়াইবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, কনস্টেবল শোয়াইবুর রহমানসহ আরও কিছু পুলিশ সদস্য বিগত সরকারের আজ্ঞাবহ কর্মকর্তাদের ইন্ধনে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।
গ্রেফতারের পর দুই পুলিশ সদস্যকে সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি শোয়াইবুর রহমান ও সজীব সরকার ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ও ঘৃণা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছেন। এ ছাড়া জনসাধারণের সেবা বাধাগ্রস্ত ও বিনষ্ট করার জন্য আসামিরা উসকানিমূলক বার্তা পোস্ট করছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেওয়ার মাস্টারমাইন্ড কে সেটি খুঁজে বের করার জন্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অপরদিকে আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করা হয়। আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়, সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত শোয়াইবুর রহমান ও সজিব সরকারের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সূত্র : প্রথম আলো