সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের পোশাক শিল্পাঞ্চল দুই দিন কিছুটা স্বাভাবিক থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার আবার অস্থির হয়ে উঠেছে। সকালে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় শ্রমিকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম রোকেয়া বেগম। তিনি মাসকট গার্মেন্টসের সহকারী সেলাই মেশিন অপারেটর ছিলেন। শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গতকাল ওই তিন শিল্পাঞ্চলে ৩৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। আশুলিয়ায় বন্ধ হয়েছে ২৯টি কারখানা। এর মধ্যে ১৫টি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গাজীপুরে পাঁচটি কারখানা বন্ধ হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে আশুলিয়ায় ২৭২টি কারখানার মধ্যে চালু আছে ২৫৩টি। শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় বন্ধ আছে ১৫টি কারখানা। সেগুলো হচ্ছে মাসকট গার্মেন্টস, মাসকট নিট, মাসকট ফ্যাশনস, রেডিয়েন্স জিন্স, রেডিয়েন্স ফ্যাশন, স্ক্যানডেক্স, হামজা ক্লোদিং, আরকে নিট, সান অ্যাপারেলস, টেক ম্যাক্স, শিন শিন অ্যাপারেলস, পার্ল গার্মেন্টস, জেনারেশন নেক্সট, ইউরোপিয়া ও সুসুকা নিট। এ ছাড়া রেডিয়েন্স নিটওয়্যারস, এস-২১ অ্যাপারেলস, কমফিট কম্পোজিট (ইউনিট-২) ও সাউদার্ন গার্মেন্টস কারখানা চালু থাকলেও পরে বন্ধ হয়ে যায়।
বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে, আশুলিয়ার ২৭২টি কারখানার মধ্যে ২৬০টি আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধ করেছে। সংগঠনটির ৯৪.৩১ শতাংশ সদস্য কারখানা আগস্ট মাসের বেতন দিয়েছে।বিভিন্ন দাবি আদায়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকার সাভার-আশুলিয়া ও গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অস্থিরতা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত সপ্তাহে শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস অতিরিক্ত ২২৫ টাকা, টিফিন ভাতা বাড়ানো, শ্রমিকদের কালো তালিকাভুক্তি বাতিল এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। এরপর চলতি সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতির বেশ খানিকটা উন্নতি হয়।
বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, আশুলিয়ায় সকালে দুই পক্ষের শ্রমিকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কারখানা বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চলে টানা অস্থিরতার সময় অনেক কারখানা বন্ধ ছিল। বর্তমানে যেগুলো বন্ধ আছে, সেগুলোর মালিকরা কারখানা খোলার বিষয়ে আস্থা পাচ্ছেন না। তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেই উৎপাদনে ফিরতে চাইছেন।