পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম দেশের শত্রু। যারা এগুলোতে জড়িয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা তৎপর। কেউ কেউ জামিন পেয়েছে, জামিন একটি আইনি অধিকার। আমরা যদি দেখি আবার জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে, সেখানে তাকে আবার আইনের আওতায় আনবো। আমাদের মনিটরিং কিন্তু সব সময় আছে। কোনো অপরাধে কারো জড়িত হওয়ার সুযোগ নেই।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ময়নুল ইসলাম বলেন, কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টকারী ঘটনা ঘটবে না। এই দেশ সব মানুষের। এই দেশ হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-মুসলমান সবার। যারা এই দেশের নাগরিক প্রতিটি বিষয়ে সবার সমান অধিকার। যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে চাই। সামনে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গা উৎসব। তারা তা উৎসবের মধ্য দিয়ে পালন করবে। সেখানে আমাদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি বলেন, কেউ যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ করে থাকে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে। কেউ যদি নিরীহ ও নিরপরাধ হয়ে থাকেন তাহলে কারো কোনো প্রকার ভয় পাওয়ার কারণ নেই। নিরপরাধ কাউকে আসামি করলে যাচাই-বাছাইয়ের মধ্যে বের হয়ে যাবে। কোনো অফিসার বা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেউ নিরপরাধ কাউকে ধরার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত না। মামলা করলে, আসামি হলেই কাউকে ধরতে হবে, আইন এটা বলে না।
আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি জায়গায় বেশি সংস্কার সাধন করতে চাই, সেটি হলো পুলিশের লেথাল ওয়েপন বা মারণাস্ত্রের ব্যবহার করার ক্ষেত্রে। আন্তর্জাতিক একটা স্ট্যান্ডার্ড অনেক ক্ষেত্রে মানা হয়নি। আমাদের সদস্যরা যখন জাতিসংঘরে মিশনে যায়, তখন যে স্ট্যান্ডার্ড থাকে। সেই স্ট্যান্ডার্ডের ক্ষেত্রে অনেক জায়গায় ব্যত্যয় হয়েছে, সেগুলোও আমাদের আলোচনায় আছে। পুলিশের প্রশিক্ষণে সফট স্কিলের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। অ্যাপ্রোচের ক্ষেত্রে আমাদের কী কী ভুল হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছি।
আইজিপি বলেন, ‘আমাদের অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চলছে। পুলিশের খোয়া যাওয়া ৭৫ শতাংশ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আর ২৩৮টি অবৈধ অস্ত্র যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড়ি বাঙালিদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ গুজব সৃষ্টি করে সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে।’
মব জার্টিস নিয়ে পুলিশের আইজিপি বলেন, ‘ঢাকা ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে মব জার্টিসের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা একটা বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই, মব জাস্টিসের নামে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। তাহলে যার প্রতি মব জাস্টিসের নামে অন্যায় করলেন, অবিচার করলেন সেই ব্যাপারে আপনাকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আপনাকে আইনের আওতায় আসতে হবে। আমরা এই ব্যাপারে অনেক কঠোর।’
এ সময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।