চাকরিতে পুনর্বহাল, নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নগরের ভোগরা চৌধুরীবাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ পরিস্থিতিতে অন্তত ১০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, গাজীপুরের বেশির ভাগ কারখানার সামনে লেখা আছে ‘শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ’। মাসের ১-৫ তারিখ পর্যন্ত প্রতিটি কারখানার সামনেই শত শত শ্রমিক চাকরির জন্য ভিড় করেন। শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ থাকার কথা লেখা থাকলেও গোপনে নারী শ্রমিকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। পুরুষ শ্রমিকেরা চাকরিতে যোগদান করার পর অযথা বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ করেন-এমন অভিযোগে তাঁরা পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগ দিচ্ছেন না।
আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ভোগরা এলাকায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে চাকরির দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ অবরোধ করে বিক্ষোভ-মিছিল করেন। পরে তাঁরা বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকদের তাঁদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য কারখানার ফটকের সামনে গিয়ে আহ্বান জানান। তাঁরা সাড়া না দিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ভোগরা পর্যন্ত সব কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। ধীরে ধীরে চান্দনা চৌরাস্তা থেকে জয়দেবপুর রোড এলাকার কারখানাগুলোতেও শ্রমিকদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানা ছুটি দেওয়ার পর অনেক শ্রমিক বাসায় চলে যান। কিছু শ্রমিক বিক্ষোভে যোগ দেন। সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বেলমন্ড, টেকনো ফাইভার লিমিটেড, ইন্টারলিং, ইউরোমিক ট্যাক্স লিমিটেড, রুয়া ফ্যাশনসহ গাজীপুরে ১০টি কারখানা ছুটি দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক আলিম হোসেন বলেন, ‘আশপাশের যে কারখানায় যাবেন, দেখবেন সামনে লেখা আছে- লোক নিয়োগ বন্ধ আছে। অথচ তারা গোপনে লোক নিয়োগ করছে।’ গত চার মাস বেকার অবস্থায় আছেন তিনি। বিভিন্ন পোশাক কারখানায় পুরুষ শ্রমিকদের নিয়োগ দিচ্ছে না। অনেক কারখানায় নারী শ্রমিকদেরও ছাঁটাই করা হচ্ছে। চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং পুরুষ শ্রমিকদের চাকরিতে নিয়োগের দাবিতে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, চাকরিসহ বিভিন্ন দাবিতে পোশাক কারখানার বেশ কিছু শ্রমিক বিক্ষোভ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবরোধ করেছেন। সকাল থেকে ১০-১২টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।