ফরিদপুরের ভাঙ্গায় লালন আনন্দধামে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা হচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় আনন্দধামের প্রতিষ্ঠাতা সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ জাহিদ হাসান (৪২) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান ভাঙ্গা থানার ওসি মো. মোকছেদুর রহমান।
বুধবার রাতে অভিযোগটি মামলার এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। এ ঘটনার দুষ্টচক্রকে খুঁজে বের করার জন্য ভাঙ্গা থানার এসআই অমিয় চক্রবর্তীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়- রোববার রাত তিনটার দিকে আনন্দধামটিতে দুষ্কৃতকারীরা লালন ফকিরের ছবি, মূল্যবান বই ও জার্নাল, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটারসহ বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেয়। ভাঙচুর করা হয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্যও।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে ধামের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ জাহিদ হাসান উল্লেখ করেন, আমি ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি ভাঙ্গা থানাধীন কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করি। ওই আনন্দধাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার কিছু উচ্ছৃঙ্খল, বখাটে, মৌলবাদী মনোভাবাপন্ন তরুণ আমার বিরোধিতা শুরু করে। তারা ওই আনন্দধাম উৎখাতসহ আমার ক্ষতি করার মানসে বিভিন্ন হুমকির সুযোগ খুঁজতে থাকে।
ফরিদপুরের এসপি মো. আব্দুল জলিল এই প্রসঙ্গে বলেন, ফরিদপুরের পুলিশ বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছে, আমি ভাঙ্গা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি, প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার। হামলার ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, হামলাকারী যে-ই হোক।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে ৫১ শতাংশ জমির উপর এ লালন আনন্দধাম প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ জাহিদ হাসান। তিনি সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপকও। এই আনন্দধামে নিয়মিত পাঠচক্র, লোকসাহিত্য নিয়ে গবেষণাসহ লোকগান ও লালন সংগীত, রবীন্দ্র-নজরুল-জসীমউদ্দীনের জন্মজয়ন্তী পালনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছিল। এসব আসরে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা সমবেত হতেন।