নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মোতালেব মিয়া নামে আওয়ামী লীগ সমর্থকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাঁর পরিবারের তিনজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার দাউদপুর বীর হাটাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মোতালেব মিয়ার অভিযোগ, চাঁদা না পেয়ে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ ও তাঁর অনুসারীরা এই ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন।
এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন মোতালেবের স্ত্রী আছিয়া বেগম, বড় ভাই মোঘল মিয়া, মোঘলের স্ত্রী মোসা. কোহিনূর, তাঁদের ছেলে মো. আসাদ (১৪), সাগর মিয়া (১৬) ও তাঁদের বোনের ছেলে মো. ফয়সাল (১৬)। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আছিয়া বেগম ও মোঘল মিয়া ঢাকার পৃথক দুটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মোতালেব মিয়া জানান, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ তাঁকে হুমকি দিয়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। তার পর থেকে তিনি এলাকায় আর ব্যবসা করেননি। এরই মধ্যে প্রায় একমাস যাবৎ সুলতান মাহমুদ ও তাঁর অনুসারী যুবদল নেতা আরাফাত মুঠোফোনে তার কাছে আরও দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর কর্মচারী শামীম স্থানীয় দেবই বাজারে গেলে সুলতান মাহমুদের অনুসারী আরাফাত ও নাঈম তাঁকে মারধর করেন।
মোতালেব মিয়া আরও বলেন, ওই সময় সুলতান মাহমুদ ফোন করে আবার চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হলে বিকেলে সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁর তিনতলা বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় তাঁরা বাড়ির দোতলা পর্যন্ত ভাঙচুর করে অন্তত ১৮ ভরি সোনা ও এক লাখ টাকা নিয়ে যান। পরে গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত পড়েছে’ বলে ঘোষণা দিলে হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে চলে যান।
ঘটনার অন্তত দুজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, লুটপাটের সময় হামলাকারীরা স্থানীয় লোকজনকে ভিডিও ও ছবি তোলায় বাধা দেন।
এ বিষয়ে সুলতান মাহমুদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।
চাঁদা চাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে মো. আরাফাত বলেন, তাঁকে ফোন করে বলেছি, আগে যেসব লোকজনের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন, তাঁদের সঙ্গে বসে যেন মীমাংসা করেন। কোনো চাঁদা চাইনি। বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটের সময় সুলতান মাহমুদসহ তাঁরা কেউ ঘটনাস্থলে যাননি বলে দাবি করেন এই যুবদল নেতা।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ঘটনার পর ভোলাব তদন্তকেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। ভুক্তভোগী পরিবারকে আমরা অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। তাঁদের দুজন হাসপাতালে ভর্তি। এ কারণে তাঁরা হয়তো অভিযোগ দেওয়ার সময় পাননি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।