হত্যাকারী ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী, চক্রান্তকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার হাত থেকে সরকার বাঁচাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়। এ বিবৃতিটি আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট দেয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে মিশে যাওয়া পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদেরকে যে কোনো ধরনের অপরাধের জন্য মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মানে হলো যারা হাজার হাজার পুলিশ হত্যা করেছে, হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে, হাজার হাজার মানুষকে পিটিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আহত করেছে, অনেককে আজীবনের জন্যে পঙ্গু করেছে, লক্ষ কোটি টাকার জনগণের সম্পদের ক্ষতি করেছে তাদেরকে সকল অপকর্মের জন্য দায়মুক্তি দিয়ে দেয়া হয়েছে, ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছে!
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ যেনো ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরবর্তী সকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি! জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি যেমন দিয়েছিল খন্দকার মোশতাক ঠিক তেমনি ২০২৪ সালের হত্যা, খুন, অগ্নিসংযোগ এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জোর পূর্বক দেশত্যাগ করিয়ে হাজার হাজার মানুষকে হত্যার পর অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখল করে ড. ইউনূস ও তার পরিষদ হত্যাকারী ও দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী, চক্রান্তকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চাচ্ছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৫ জুলাই থেকে যে সকল হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজ সংগঠিত হয় সেগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট জুডিশিয়াল এনকোয়ারি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন এবং জাতিসংঘের কাছে উন্নত প্রযুক্তিসহ তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার জন্যে আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, অবৈধ ভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ড.ইউনূস জুডিশিয়াল কমিটির তদন্ত স্থগিত করে দেয়। এর কারণ সহজে অনুমেয় যে ইউনূস চান না জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত যতো ধরনের অপরাধ হয়েছে তার বিচার হোক, এর সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের চিহ্নিত করা হোক এবং এদের দোষী প্রমাণিত করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিশ্ব মিডিয়ায় বলেছেন জুলাইয়ের আন্দোলন ছিলো একটি সূক্ষ্ম পরিকল্পনা এবং মাস্টারমাইন্ডের মাধ্যমে তা পরিচালিত হয়। এর মানে হলো আন্দোলনের সময় যতো হত্যা হয়েছে তা প্রিপ্লানিংয়ের মাধ্যমেই হয়েছে। যারা এই কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে এবং ৫ আগস্ট থেকে হাজার হাজার মানুষকে পুলিশকে হত্যা করেছে তারা চিহ্নিত হোক ও বিচারের মুখোমুখি হোক তা ইউনূস চান না। হত্যাকারীদের ইনডেমনিটি দেয়ার মাধ্যমে বিনাতদন্তে ও বিনাবিচারে ক্ষমা করে দিয়েছেন একই সঙ্গে তিনি ও তার সহযোগীরাও এসব হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার সাথে জড়িততাই প্রমাণিত হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৫ আগস্টের খুনিদের ইনডেমনিটি দিয়েও রক্ষা করতে পারেনি খন্দকার মোশতাক। জনগণ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে মহান জাতীয় সংসদে ইনডেমনিটি বাতিল করে জাতির পিতা হত্যাকারীদের বিচার করেছে। ইনশাআল্লাহ খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না আবারো বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনগণ এই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে ইউনূসের ইনডেমনিটি বাতিল করে সকল হত্যাকারী, লুণ্ঠনকারী অগ্নিসংযোগকারী ও দেশের সম্পদ বিনষ্টকারীদের বিচার এই বাংলাদেশের মাটিতেই করবে। ইনশাআল্লাহ্।