গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পাঁচ বছরের শিশু সোয়াইবের অপহরণ করে হত্যা করা হয়। এ হ্যাকাণ্ডের ছয়দিন পর রহস্যের জট খুলতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। নির্মম এ ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন প্রতিবেশী সানোয়ার হোসেন, যিনি এ অপহরণ ও হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী।
৯ অক্টোবর রাতে সোয়াইব তার বাবার সঙ্গে টিভি দেখছিল। কিছুক্ষণ পর বাইরে যাওয়ার পর সে আর ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা রাতভর তাকে খোঁজার পর কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, সেদিন রাতে সোয়াইবের বাবার মোবাইলে অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে একাধিকবার ফোন আসে, যেখানে মুক্তিপণের দাবি করা হয়। শেষ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকায় মুক্তিপণ চুক্তি হয়, কিন্তু শিশুটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে অপরাধীরা মোবাইল বন্ধ করে দেয়।
পুলিশ মুক্তিপণ দাবিকারীর কল ট্র্যাক করে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করে। তারা গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার একই গ্রামের বাসিন্দা এবং যাত্রীবাহী পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করতেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রধান অপরাধী সানোয়ার অপহরণের পরেও প্রতিদিন সোয়াইবের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং কান্নাকাটি করে তাদের সহানুভূতি অর্জনের চেষ্টা করতেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সানোয়ার স্বীকার করে, অপহরণের পরপরই শক্ত তার দিয়ে সোয়াইবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় এবং লাশ তুরাগ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিশ বলছে, নদীর স্রোতের কারণে লাশ অনেক দূরে চলে যেতে পারে, তাই লাশ উদ্ধারের কাজ এখনো চলছে।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক আ. রাজ্জাক জানান, সানোয়ার ও রুবেল একই পরিবহনের চালক ছিলেন। সোয়াইব নিখোঁজ হওয়ার পর সানোয়ার নিয়মিত পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখত, কিন্তু তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে তারাই এই অপরাধ ঘটিয়েছে। লাশ উদ্ধারের কাজ চলমান। অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।