কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একটি মামলার আসামিরা আদালতে জামিন নিতে গেলে তাদের অন্তত ১৫টি বাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলা, ভাঙচুর ও লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে একই মামলার অন্যতম আসামি মো. মাসুদকে (৩২) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তিনি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চাপড়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ কটার সঙ্গে বিএনপি নেতা লাল্টু ও তার সমর্থকদের বিরোধ রয়েছে। গত ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় দুপক্ষের সংঘর্ষে ১০-১৫ জন আহত হন।
এ ঘটনায় ৯ অক্টোবর লাল্টু গ্রুপের মনোয়ার হোসেন ১৬ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দেন। আর ১৪ অক্টোবর কটা গ্রুপের রেজাউল করিম ১৯ জনকে আসামি করে এজাহার দিলে পুলিশ তা মামলা হিসেবে রুজু করে। এ মামলার আসামিরা বুধবার আদালতে জামিন নিতে গেলে তাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে বাদীপক্ষের লোকজন।
গতকাল দুপুরে পাহাড়পুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য। উভয়পক্ষের বেশ কিছু বাড়ির বেড়া, আসবাব ও বিদ্যুতের মিটার ভাঙচুর করা হয়েছে। গোয়ালে গবাদি পশু নেই। কেউ কেউ ঘরের মালপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। গ্রামের মোড়ে মোড়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল।
লাল্টু গ্রুপের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী জোসনা খাতুন বলেন, স্বামী আদালতে জামিন নিতে গেছেন। সেই সুযোগে কটা গ্রুপের জিতু, মিজান, হাসানসহ ১৫ -২০ জন মিলে ঘরের আসবাব ও কৃষি যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে প্রায় ৫ লাখ টাকা মূল্যের চারটি গরু ও চারটি ছাগল লুট করে নিয়ে গেছে। লাল্টু গ্রুপের মোমিন শেখ বলেন, ‘আমরা আগে এজাহার দিয়েছি। তবুও মামলা নেয়নি পুলিশ।’ তার অভিযোগ, পুলিশ টাকা খেয়ে প্রতিপক্ষের মামলা নিয়েছে।
এদিকে হামলা ও লুটপাটের পরে গা-ঢাকা দিয়েছেন কটা গ্রুপের পুরুষরা। এ পক্ষের তরিকুলের স্ত্রী মুক্তি খাতুন বলেন, সেদিন প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের লোকজনকে মারধর করে বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। সেজন্য আমাদের লোকজন করেছে।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম। তিনি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। ওসির ভাষ্য, লাল্টু পক্ষের এজাহারে ত্রুটি থাকায় মামলা নথিভুক্ত করতে দেরি হচ্ছে। সংশোধনের পর মামলা নেবেন। বুধবারের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা নিতে ওসিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ থাকলে তাও খতিয়ে দেখা হবে।