অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পাশাপাশি লিখিতভাবে ২৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামায়াতকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান এলডিপি প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবির কথা উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, যারা আমাদের ছেলে-মেয়েদের হত্যা করেছে, তারা কি আমাদের দুলাভাই। তাদের আমরা নরম বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেব।
আওয়ামী লীগ আমলে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওদেরকে তো ফাঁসি দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দিতে হবে। জামায়াতকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দেন।
এলডিপি প্রেসিডেন্ট বলেন, নির্বাচন করে করবেন কি? সব চোর-ডাকাতগুলি যদি থেকে যায়। যারাই দুর্নীতি করেছে তাদের বিচার করতে হবে। যারা আমার ছেলে-মেয়েদের হত্যা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। যারা জনগণের টাকা লুণ্ঠন করেছে তাদের থেকে সেই টাকাগুলো নিয়ে আসতে হবে। তারপরে নির্বাচন করেন।
তিনি বলেন, আপনারা আমরা সবাই, পুরা জাতি একটা যুদ্ধের মধ্যে গেলাম জুলাই-আগস্ট মাসে। এ যুদ্ধটা কার বিরুদ্ধে হলো, এ যুদ্ধটা হলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কেন হলো, তারা পুলিশকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, জনগণের মুখোমুখি করে দিয়েছে। দেশকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দিয়েছে। আমাদের বহু ছেলেমেয়েরা হতাহত হয়েছে। প্রায় দেড় হাজারের বেশি ছেলেমেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অনেকে বলে আরও বেশি হবে, যেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৫-২০ হাজারের বেশি বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে।
কর্নেল (অব.) অলি বলেন, আজকে কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আজকে আমরা আবার বলেছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তারা সবাইকে ব্যবহার করেছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। শেষপর্যন্ত তারা জনতার চাপে টিকে থাকতে পারেনি, ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূসকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়ে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, আমরা বলেছি সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যান। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। কারণ এটা একটা ওয়ারটাইম সরকারের মতো। এটা পিস টাইম সরকার না। ওয়ার টাইম সরকারকে যা করতে হয়, কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এখানে সহজ-সরলভাবে কিছু করার অবকাশ নেই। যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।
তিনি বলেন, হাসিনার যারা কট্টর সমর্থক ছিল তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে জেলে নিক্ষেপ করতে হবে। আওয়ামী লীগের যারা সমর্থক ছিল, তারা এখনও শেখ হাসিনাকে সাহায্য করছে। তারা চিহ্নিত, তাদের চিহ্নিত করার কোনো প্রয়োজন নেই।