চাঁদাবাজি-লুটপাটের অভিযোগ : ছাত্রদলের তিন নেতাকে অব্যাহতি

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

চাঁদাবাজি-লুটপাটসহ বিভিন্ন শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকায় রাজশাহীর তিন ছাত্রদল নেতাকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের দফতর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

অব্যাহতি পাওয়া নেতারা হলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব ও কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিব এবং রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিবকে সাংগঠনিক পদ থেকে এবং ছাত্রনেতা হাসিবুল ইসলাম হাসিবকে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে রাবি শাখা ছাত্রলীগের ৯৮ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবিব। মামলায় অজ্ঞাত আরও ২০০ থেকে ২২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সম্প্রতি এই মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে এক ছাত্রলীগ কর্মীর সঙ্গে বাদী মোহাম্মদ আহসান হাবিব ও ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলাম হাসিবের কথোপকথনের দুটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

এদিকে চাঁদাবাজি, পুকুরের মাছ লুট, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দাপটের অভিযোগে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীনের নির্দেশে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

১২ অক্টোবর উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামের রুবেল হক তার পুকুরের মাছ লুটের ঘটনায় মহব্বত হোসেনের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ওই দিন ছাত্রদল নেতা মহব্বত হোসেনের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন সন্ত্রাসী তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে দুটি পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এর আগে থানায় রুবেল হক মহব্বত হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মাছ লুটের সময় তিনি সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতা নিয়েছিলেন। পরে কিছু মাছ পুলিশ ও সেনাবাহিনী জব্দ করে।

দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন জানান, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মহব্বত হোসেনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মামলায় জড়ানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে ও স্থাপনায় হামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করার অভিযোগ ওঠে। তিনি দলবল নিয়ে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা উপজেলার কুমান্নিতলা হাট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খাজনা আদায় শুরু করেন। তবে এক মাস পর হাটটি উপজেলা প্রশাসন ইজারা দেয়। এ ছাড়া মাদারীগঞ্জ, মোহনগঞ্জ, চান্দেরআড়া ও পোড়াকয়া এলাকার আওয়ামী লীগ সমর্থক কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মহব্বত মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।

২০২০ সালের ৮ আগস্ট মহব্বত হোসেনকে আহ্বায়ক করে বাগমারা উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে তিনি দলীয় দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তবে ২০২৩ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে মন্তব্যের কারণে দলীয় এক কর্মীকে মারপিট করে মোবাইলে তা স্বজনদের শোনান মহব্বত।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য ছাত্রদল নেতা মহব্বত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম ছাত্রদল নেতা মহব্বতের বিরুদ্ধে থানায় মাছ লুটের অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

  • চাঁদাবাজি
  • ছাত্রদল নেতা
  • লুটপাট
  • #