সাংবাদিককে না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, সবার মুখে ছিল মাস্ক

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ মাস আগে

খুলনার কয়রায় ভোরের কাগজের সাংবাদিক সিরাজুদ্দৌলা লিংকনকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে ২ নম্বর কয়রা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সাংবাদিক লিংকনের স্ত্রী রোকেয়া আকতার জানান, গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে ৮-১০টি মোটরসাইকেলযোগে দুর্বৃত্তরা বাড়ির ফটকের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারা সাংবাদিক লিংকনের নাম ধরে ডাকতে থাকে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। ফটক বন্ধ থাকায় তারা জোরে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ভাঙার চেষ্টা করলে তিনি এগিয়ে গিয়ে গেট খুলে দিলে ২০-২৫ জন যুবক ঘরে ঢুকে লিংকনকে খুঁজতে থাকে।

তাকে না পেয়ে ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এতে বাধা দিলে তারা তাকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এ সময় তারা তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া আলমারিতে থাকা টাকাপয়সাও নিয়ে যায় তারা।
ঘটনার সময় ওই বাড়িতে ছিলেন সাংবাদিক লিংকনের বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ভাগনি সোনিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, দুর্বৃত্তদের সবার মুখে মাস্ক পরা ছিল। তারা বাড়িতে ঢুকে মামাকে (লিংকন) খুঁজে না পেয়ে মামিকে ও তার কোলে থাকা শিশু সন্তানকে মারধর করে সোনার গহনা ছিনিয়ে নেয়। তারা আমাকেও মারধর করে মামা কোথায় লুকিয়ে আছে জানতে চায়। ঘটনার পর থেকে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

সাংবাদিক সিরাজুদ্দৌলা লিংকন বলেন, হামলার ঘটনার আগে বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ব্যানারে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাতুল হাসান আমাকে জড়িয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। পরে তার নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা হয়েছে। আগেই আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশেই হামলা চালিয়েছিল। ঘটনার পর থেকে বাড়ির নারী-শিশুরা আতঙ্কে আছে। এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।

জানতে চাইলে রাতুল হাসান অভিযোগ অস্বীকার বলেন, বুধবার বিকেলে কয়রা সদরে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে কয়েকজন সাংবাদিকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য দেওয়া হয়। এ সময় সাংবাদিক লিংকনের নাম উঠে আসে। পরে শুনেছি সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা হয়েছে। সেখানে আমার নাম জড়ানো হচ্ছে। আমি কোনোভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কালাম শেখ বলেন, এভাবে রাতের আঁধারে কারো বাড়িতে হামলা ও নারী শিশুকে মারধর করা গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) শাহ আলম বলেন, খবর পেয়ে সাংবাদিকের বাড়িতে পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • মারধর
  • সাংবাদিক
  • স্ত্রী-সন্তান
  • #