আন্দোলনের সুযোগে ‘অবৈধভাবে’ নিয়োগ নেওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. নেয়ামুল হক ও উপাধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানের পদত্যাগ এবং বৈধ অধ্যক্ষ অধ্যাপক বেদর উদ্দিনকে পদে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেবে না এবং ক্লাসেও ফিরবে না ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা সিটি কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত ছাত্রদের পক্ষে না গেলেই পরদিন বুধবার (৩০ অক্টোবর) থেকে আবারও আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করবে তারা। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে অবস্থান করে। সন্ধ্যায় ছাত্রদের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে আন্দোলন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের জানানো হয় যে মঙ্গলবার ঢাকা সিটি কলেজ বন্ধ থাকবে। গভর্নিং বডির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং অবৈধ অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ দ্বিতীয় বর্ষের আইসিটির পরীক্ষা ছিল পরীক্ষা না দিয়ে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে।
দুপুরের ১২টা থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় এক ঘণ্টা পর রাস্তায় যান চলাচল শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বেলা ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুমের দিকে গেলে সাত তলার একটি বাথরুমে আশ্রয় নেন পদ দখল করা অবৈধ অধ্যক্ষ। উপাধ্যক্ষকে খুঁজে পায়নি ছাত্ররা। দীর্ঘ সময় পর সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আগামীকাল (বুধবার) মিটিংয়ে পদত্যাগ করার কথা রয়েছে। যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেবে না শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে পাঁচ দফা দাবি আদায়ে সিটি কলেজ ঘিরে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে কলেজের অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা আটকে পড়েছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান নেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
দুপুরে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, সিটি কলেজের দুটি গেট বন্ধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। অবরোধের কারণে বন্ধ রয়েছে ২ নম্বর সড়কে যান চলাচল। আর গেটের সামনে অবস্থান নিয়েছে সেনা সদস্যরা। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে আসে সেনাবাহিনী। তবে এর আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা (পুলিশ) ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়।
ফারিয়া তাবাসসুম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সিটি কলেজ এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নামে-বেনামে বিভিন্ন ফান্ড খুলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। যার প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের চাপ সৃষ্টি করে।
সন্ধ্যায় আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। কাল গভর্নিং বডির মিটিং হবে। সেখানে যদি দাবি মেনে না নেওয়া হয় তাহলে আমরা পরীক্ষায় অংশ নেবো, ক্লাসেও থাকবো ন।