শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে শনিবার (২ নভেম্বর) বন্ধ হয়ে যায় দেশনাটক দলের নাট্যপ্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এ নিয়ে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। প্রতিক্রিয়ায় অভিনেত্রী বন্যা মির্জা তার ফেসবুক পোস্টে কিছু কথা বলেছেন। তার মন্তব্য যথাসময়.কম এর পাঠকের জন্য তুলে ধরা হল।
অভিনেত্রী বন্যা মির্জা তার এক ফেসবুক পোস্টে জানান, নাটক বন্ধের কারণ সৈয়দ জামিল আহমেদ নন। তিনি লিখেন, কেউ না জেনে একটা মন্তব্য করে দিয়েন না। কার দায় কাকে নিতে হবে সেটা বলে দেওয়া সহজ। কোন কিছু না জেনে একটা যেকোনো মন্তব্য করাও সহজ এবং ফেসবুকে যে কেউ যখন তখন সেটা করতে পারেন।
তিনি আরও লিখেন, আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে অনেক বিপ্লব করতে পারি। নাট্যকর্মীদের কথা না হয় ভাবলাম না কিন্তু, যারা নাটক দেখতে এসেছিলেন? সেই দর্শকদের কথা দেশ নাটককে ভাবতে হতো। যতক্ষণে লোক জড়ো হয়েছিল ততক্ষণে অনেক দর্শকও এসে পড়েছিলেন। দর্শকদের দায় নাট্যকর্মীদেরই। শুনুন, দেশ নাটকে কোনো দলপ্রধান নেই। একটা দলে কমিটি থাকতে হয়। এটাই নিয়ম। আর নিয়ম করে সেটা কেউ না কেউ থাকেন। তবে অনেক দলেই দলীয় প্রধান থাকেন ও সারা জীবন তিনিই থাকেন। এমনও হয়। তো এই কথা থিয়েটারের বাইরে কারো বোঝার কথা না। কিন্তু সবাই এত বুঝে গেলেন? যে ব্যানারের ছবি দেখেছি তা বাইরের কারো করা বলে মনে হচ্ছে না। ব্যানার কি তৈরি করা ছিল? লোকেরা ব্যানারসমেত নাটক বন্ধ করতে এসেছিল! এটা দেখেই তো বোঝা যায় কে বা কারা করেছে। এটি ‘বিভীষণ’ কাজ। যিনি বা যারা করেছেন তাদের আনসেকসেসফুল পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার নিয়ে ঘুমাতে পারছেন না। অন্যখানে শক্তি ক্ষয় করে চলেছেন।
এরপর জামিল আহমেদের প্রসঙ্গ টেনে বন্যা আরও লিখেন, এটা না বোঝার মতো কিছু না যে কারা চাননি জামিল আহমেদ শিল্পকলার ডিজি হন? তারা সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। আর দেশ নাটকে সকল মতের মানুষ একসাথেই কাজ করেন। তাদের মতবিরোধ থাকতে পারে। আছে। কিন্তু অসম্মান নেই। তাদের দর্শক আছে। লোক তাদের নাটক দেখতে আসে। এটা অর্জন। সৈয়দ জামিল আহমেদ নিজে গেছেন এর ভিতর কারণ ততক্ষণে তিনি বুঝেছেন কোন আইনি সহায়তা পাবেন না। আর তিনি ডিজি হয়েছেন মানে তিনি কাজটি করতেই ডিজি হবার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছেন। তিনি মোটেই সেই মানুষ নন যিনি নাটক বন্ধ করতে বলবেন। দেশ নাটকেরও কেউ সেটা বলছেন না।
সবশেষে তিনি লিখেন, যারা নাটক বন্ধের দায় জামিল আহমেদকে দিচ্ছেন তারা গিয়ে বিপ্লব করেন। দর্শকের দায় নাট্যকর্মীদের নিতে হয়। এমন বোকা মার্কা কথা খুব বিরক্তিকর। আর লোকজন ১০ জন হোক আর ৫০ জন হোক তারা জানেই না তারা সেখানে কেন গিয়েছে। তারা কেবল জানে এভাবে চিৎকার করতে হয়। যা তাদের শেখানো হয়েছে। যারা মজা দেখছেন, তারা জানবেন যে তাদের আমরা চিনি। এসবই আমাদের জীবনের শ্লেষ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে শনিবার (২ নভেম্বর) বন্ধ হয়ে যায় দেশনাটক দলের প্রদর্শনী। এদিন নাট্যদলটির প্রদর্শনী চলার সময়ে দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে, নাটক বন্ধের নির্দেশ দেন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। জাতীয় নাট্যশালায় গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন বেশ কিছু উত্তেজিত জনতা। তাদের দাবি, এই নাটক প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। এর ফলে নাট্যপ্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক।