শিল্পকলা একাডেমির সামনে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিবাদ সভায় হামলা এবং মেট্রোলের কার্ডে জাতীয় নিদর্শনগুলোর ছবি বাদ দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে আওয়ামী লীগ বলেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থাশীল ও প্রগতিশীল আদর্শ ধারণকারী জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ ধরনের গর্হিত কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি। শনিবার (৯ নভেম্বর) ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলা হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ বলেছে, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি ছদ্মবেশী আন্দোলনকে হস্তগত করার মধ্য দিয়ে তারা একটি সরলরৈখিক বয়ান তৈরির চেষ্টা করছে এবং তা সমগ্র জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য ফ্যাসিবাদী কায়দায় মব-সন্ত্রাস চালিয়ে নজিরবিহীন নৈরাজ্যবাদ কায়েম করছে।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, শিল্পকলা একাডেমির সামনে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রতিবাদ সভায় হামলা এবং মেট্রোরেলের কার্ডে জাতীয় নিদর্শনগুলোর ছবি বাদ দেওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বর্তমান সরকার সমগ্র বাংলাদেশকে মাৎস্যন্যায়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষের চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাকে সর্বশক্তি দিয়ে দমনের চেষ্টা করছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য প্রগতির পথ ও শুভ বিবেচনার দ্বারগুলো রুদ্ধ করে দিচ্ছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, আমাদের অতীত ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবকে ম্লান করে দেওয়া।
আওয়ামী লীগ বলেছে, অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক এই সরকার নিজেই নিজের বৈধতা ঘোষণা করতে চায়। তারা বুঝাতে চায় যে, বৈধতার জন্য তারা জনগণের মুখাপেক্ষী না। বরং জনগণ তাদের জীবন-যাপনের জন্য তাদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে।
দলটি বলছে, রাষ্ট্র ও সমাজের কোথাও সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। জনগণকে স্বস্তি দিতে না পারা এই সরকার তাদের ব্যর্থতা আড়াল করতে একের পর এক এজেন্ডার সিরিয়াল নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হচ্ছে এবং জাতীয় বিবেককে ব্যস্ত রাখার অপতৎপরতা করছে। আর যেখানে তাদের বিরুদ্ধে মত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে সেখানে হয় মব-সন্ত্রাস চালিয়ে বা সরকারিভাবে বলপ্রয়োগ করে তা দমনে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শিল্পকলায় নাটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং গতকাল পরিকল্পিতভাবে নাট্যশিল্পীদের উপর হামলা চালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনে করে, শিল্পকলা একাডেমি দেশের মানুষের উন্নতবোধের জাগরণ ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এবং শিল্পীরা সমাজে মুক্ত ও প্রগতিবাদী চিন্তার বিকাশের অগ্রগামী জনগোষ্ঠী। মব-সন্ত্রাসের মাধ্যমে শিল্পকলায় আধিপত্য বিস্তার ও শিল্পীদের উপর হামলা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে আওয়ামী লীগ।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই বলে আসছে, এই সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি জনযুদ্ধ। তারা বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জনগণের অংশীদারত্ব মুছে ফেলতে চায়। এই কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে নতুন বয়ান নির্মাণ করতে ও তার স্মৃতিচিহ্ন মুছে ফেলতে চায়।
এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে তাদের উক্তি ও কাজ তারই প্রমাণ বহন করে। এরই অংশ হিসেবে এই অবৈধ সরকার মেট্রোরেলের কার্ড থেকে জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলো বাদ দিয়েছে। যা একইসঙ্গে নিন্দনীয় ও ঘৃণিত কাজ। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আস্থাশীল ও প্রগতিশীল আদর্শ ধারণকারী জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ ধরনের গর্হিত কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।