১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংস্করণ:
গোপালগঞ্জে দিনমজুর বাবা রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে থাকায় ছোট্ট একমাস বয়সি দুই শিশুসহ চার ভাইবোনের দেখভাল করতে সমাজসেবা অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর):বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
এক মাস আগে জন্ম নেয় সাজ্জাদ মোল্লার (১৩) যমজ দুই বোন। তার এক সপ্তাহ পর মারা যান মা। রাজনৈতিক মামলায় কারাবন্দি হন সাজ্জাদের দিনমজুর বাবা জামাল মিয়া। এতে সদ্যোজাত দুই বোনসহ তিন বোনকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে সাজ্জাদ। বোনদের মুখে দিতে পারছে না খাবার। পত্রিকায় প্রকাশিত এ খবর নজরে নিয়ে শিশুদের দেখভাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ, ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির ও ব্যারিস্টার সিফাত মাহমুদ শুভ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান, সাজিয়া আফরিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে আদালতে আদেশের কথা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দুই সন্তানকে জন্ম দিয়ে মারা গেছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার জামাল মিয়ার স্ত্রী। সদ্যজাত দুই সন্তানকে নিয়ে যখন অন্য এক লড়াই, তখন রাজনৈতিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন জামাল মিয়া। মাকে হারিয়ে ও বাবা গ্রেপ্তার হওয়ায় সদ্যজাত দুই বোনকে নিয়ে অথৈই সাগরে ছোট দুই ভাই-বোন।
জামাল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকার পরও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করায় ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, স্বেচ্ছাসেক দলের নেতা হত্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে দ্রুত তদন্ত শেষে জামালকে মুক্তি দেওয়ার দাবি পরিবার ও স্থানীয়দের।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর রাতে নিজ বাড়ি থেকে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় জামাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর এলাকাবাসী পুলিশের দ্বারস্থ হলেও পারেনি ছাড়াতে। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগরে পাঠানো হয়।
তবে পরিবারের অভিযোগ, রাজনীতি না করলেও জামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনকি তাকে ছেড়ে দিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করা হয় বলেও অভিযোগ ভুক্তোভোগী পরিবারের।
প্রতিবেশিরা বলছেন, জামাল কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তারপরেও তাকে একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এতে উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে চার ভাইবোন। তাই দ্রুত জামালের মুক্তি দাবি স্থানীয়দের।
Web Design & Development:
