ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গাজীপুরের টঙ্গীর সাতাইশ এলাকা। লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি অটোরিকশা। শনিবার (১৬ নভেম্বর) টঙ্গীর সাতাইশ শরিফ মার্কেট এলাকায় মাসকো গ্রুপের মাসকো টেক্স লিমিটেড কারখানার ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে নরসিংদীতে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন।
জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কারখানার ঝুট নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। কয়েকদিন আগে থেকেই সাতাইশ এলাকায় কাই এলুমিনিয়ামের অবশিষ্ট অংশ নিয়ে সাজেদুল ইসলাম, শেখ সুমন এবং ইকতিয়ার খান এবং আলাউদ্দিনের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা চলে।
এর জেরে শনিবার সকালে দুই দলের লোকজনের ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জড়ায় সংঘর্ষে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি অটোরিকশা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পথচারীরা। সংঘর্ষের মধ্যেই কারখানা থেকে ঝুট ভর্তি ট্রাক নিয়ে চলে যায় একপক্ষ।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ওই কারখানার সামনে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে নরসিংদীতে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে মহিষাশুড়া ইউনিয়নের বালুসাইর এলাকার হোম টেক্সটাইলের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন উপজেলার মহিষাশুড়া ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী ও ঝুট ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম (৪৫), সুমন (২৪), জুয়েল মিয়া (২৭)। এদের মধ্যে আহত সাইফুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহতরা সবাই সাইফুল গ্রুপের সমর্থক।
স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকার বিভিন্ন কাপড়ের কারখানার ঝুটের নিয়ন্ত্রণ ছিল মহিষাশুড়া ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের আহবায়ক সমীরের হাতে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন বিএনপির কর্মী সাইফুল ইসলাম। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে মামুন গ্রুপের লোকজন ওই এলাকার হোম টেক্সটাইল থেকে ঝুটের মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় সাইফুলসহ তার লোকজন বাধা দেন। পরে নরসিংদী শহর থেকে কিছু লোকজন গিয়ে মামুনের পক্ষে সাইফুল ইসলাম গ্রুপের লোকজনের ওপর হামলা করে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিপেটা করেন।
এ ঘটনায় সাইফুল, সুমন ও জুয়েল আহত হন। আহত সাইফুলকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তছলিম উদ্দিন বলেন, দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পরিদর্শনে গেছে। কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।