ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে গত সরকারের আমলে করা সব বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন বা পর্যালোচনার করতে উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম আব্দুল কাইয়ুম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট আফরোজা ফিরোজ মিতা ও ব্যারিস্টার কামারুন মাহমুদ মিতা।
আদালত জানান, বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে উচ্চ পর্যায়ের অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান কমিটিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ রাখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এক মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করে পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে অসম চুক্তি বাতিল করতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তির সময় যে দর কষাকষি হয়েছিল, তার নথি এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
এর আগে ১৩ নভেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার এম কাইয়ুম জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। বিদ্যুৎ নিয়ে আদানির সাথে হওয়া চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী ঊল্লেখ করে এ অসম চুক্তি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
৬ নভেম্বর বিদ্যুৎ নিয়ে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল চেয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্টের এক আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করে বিভিন্ন চুক্তি করেছে কি না, বিশেষ করে এসব চুক্তিতে স্বচ্ছতার অভাব আছে কি না, তা নিরূপণে এক বিশেষ আইনের অধীন একটি প্যানেল গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব চুক্তির একটি ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে করা ২৫ বছর মেয়াদি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডে আদানির ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মূলত বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।