আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলটির শীর্ষ নেতারা এবং ১৪ দলীয় জোটের শরিক কয়েকটি দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া মামলাকে ‘মিথ্যা ও কাল্পনিক’ বলে দাবি করেছে ক্ষমতাচ্যুত দলটি। একই সঙ্গে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের এবং অবৈধ ও প্রহসনমূলক বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এটি নিন্দিত হবে। বাংলাদেশের মানুষ এবং বিশ্বসম্প্রদায় এই ষড়যন্ত্রমূলক উদ্যোগকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করা বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, স্বাধীন বাংলাদেশে এ যাবত কয়েক দফা অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক শক্তি আমাদের ওপর চেপে বসেছিল। জনগণ এই অগণতান্ত্রিক শক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের আদালতের মতো আমাদের সুপ্রিমকোর্টও এই ধরনের অসাংবিধানিক শক্তিকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। সংবিধান লঙ্ঘনকারী ও অবৈধ গোষ্ঠীকে বলব, আর বিলম্ব না করে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে সরে যান। অন্যথায়, জনগণের পবিত্র ইচ্ছার প্রতিফলন এই সংবিধান এবং ইতিহাস আপনাদের ক্ষমা করবে না।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল জানিয়ে এতে বলা হয়, জাতির অঙ্গীকার পূরণে এই আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছিল। এই বিচার সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছিল। এই বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য প্রতিশোধ নেওয়ার লক্ষ্যে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং অসাংবিধানিক ও অবৈধ তথাকথিত অন্তবর্তীকালীন সরকার বঙ্গবন্ধু কন্যাও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক তথ্যের ভিত্তিতে গণহত্যার মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে। … আওয়ামী লীগ সংবিধান ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এই ঘৃণ্য প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। পাশাপাশি, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে এই অবৈধ ও প্রহসনমূলক প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন উল্লেখ করে আরও বলা হয় ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের আইনজীবীকে চিফ প্রসিকিউটার নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রহসনমূলক বিচারের লক্ষ্যে দলীয় ব্যক্তিদের ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ করা হয়। ঘৃণ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক শক্তিকে কোণঠাসা করার লক্ষ্যে এই ট্রাইব্যুনালকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও বে-আইনিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।