গাইবান্ধায় বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে আহত ১০

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ সপ্তাহ আগে

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে একই পরিষদের সদস্যদের দ্বন্দ্বের জেরে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে পথচারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে পলাশবাড়ীর চারমাথা মোড়ে উপজেলা পরিষদের গেইট সংলগ্ন এলাকায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলা এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ও দোকানে ভাঙচুর এবং হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

এতে আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদে জামায়াত সমর্থিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাহিদুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে ইউপি সদস্যদের দ্বন্দ্ব চলছিল।

শুরু থেকেই স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা ইউপি সদস্যদের পক্ষ নেন। অন্যদিকে, স্থানীয় জামায়াত নেতারা নেন রাহিদুল ইসলাম বাবুর পক্ষ।

সোমবার ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান রাহিদুলের অপসারণ চেয়ে পলাশবাড়ী উপজেলার ইউএনওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব দেন।
বুধবার বিকালে বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর মধ্যস্থতায় তার কার্যালয়ে এক সমঝোতা বৈঠক শুরু হয়। কিন্তু দুপক্ষের বাকবিতণ্ডায় বৈঠকটি পণ্ড হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপজেলা পরিষদের গেইট সংলগ্ন চৌমাথা মোড়ে অবস্থান নেন।

এক পর্যায়ে তারা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ফাঁকে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়া অন্তত আটটি মোটরসাইকেলসহ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়েছে। ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে পথচারীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর আসে।

পলাশবাড়ী উপজেলার ইউএনও মো. কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি শুনানির জন্য ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান রাহিদুল ইসলাম ও ইউপি সদস্যদের তার দপ্তরে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এই শুনানির মধ্যে হঠাৎ দুই দলের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে তারা হট্টগোল শুরু করেন। তখন শুনানির কার্যক্রম স্থগিত করি। পরে রাতে বাইরে এই ঘটনা ঘটে।

পলাশবাড়ী উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সমঝোতা বৈঠক পণ্ড হওয়ার পর চেয়ারম্যান রাহিদুল ইসলামসহ তাদের লোকজন বের হয়ে যাওয়ার সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে তাদের ৩-৪ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে পলাশবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস ছামাদের মোবাইলে কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।তবে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক, পলাশবাড়ী পৌর এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম লিয়াকত মোবাইল ফোনে বলেন, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্র হাতে ধাওয়া এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এতে আমাদের পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্তমানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

#