ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী পুতিন, তবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অনড়

: আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ সপ্তাহ আগে

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেইনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী হলেও বেশ কিছু বিষয়ে কয়েকটি দাবিতে অনড় রয়েছেন। ইউক্রেইনের কাছে ভূখণ্ডের বিষয়ে কোনও ছাড় দিতে রাজি নন পুতিন। ইউক্রেইনের পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করাও আলোচনার শর্ত হিসেবে রেখেছেন তিনি। ক্রেমলিনের চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল পাঁচ কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় হোয়াইট হাউজে ফিরছেন। রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধে অগ্রগতি অর্জন করার সময়ে ট্রাম্পের এই আগমন ঘটছে। রাশিয়ার দখরৈ এখন ইউক্রেইনের যতখানি ভূখণ্ড আছে- তা যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যের সমান। বর্তমানে রুশবাহিনী ২০২২ সালে ইউক্রেইনে আগ্রাসনের শুরুর দিকের চেয়েও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।

কীভাবে হতে পারে সমঝোতা

উল্লেখ্য, মস্কো এই চারটি অঞ্চলকে পুরোপুরি রাশিয়ার অংশ বলে দাবি করলেও সেখানকার ৭০-৮০ শতাংশ ভূখণ্ড রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। বাকি ২৬ হাজার বর্গকিলোমিটারের নিয়ন্ত্রণ এখনও ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে।

ন্যাটো নিয়ে পুতিনের আপত্তি

পুতিন চলতি মাসে বলেছেন, যেকোনও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রণক্ষেত্রের বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এমন একটি স্বল্পস্থায়ী বিরতি হতে পারে যা পশ্চিমাদের ইউক্রেনকে পুনরায় অস্ত্রসজ্জিত করার সুযোগ করে দেবে।

তিনি বলেন, যদি ইউক্রেন নিরপেক্ষ না হয়, তবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কোনও সুসম্পর্কের কল্পনা করা কঠিন। কারণ এটি ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুযোগ দেবে।

কঠিন শর্ত ও জটিলতা

উপযুক্ত নিরাপত্তা নিশ্চয়তার শর্তে রাশিয়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান বন্ধের পাশাপাশি ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর আকার সীমিত করার মতো শর্ত আরোপ করতে পারে। তবে দুই পক্ষের অবস্থানে এত পার্থক্য ও দূরত্ব রয়েছে যে একটি স্থায়ী সমঝোতা চুক্তি করা অত্যন্ত কঠিন হবে।

রাশিয়ার বিশিষ্ট বিশ্লেষক দিমিত্রি সাইমসের মতে, একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হলেও ইউক্রেন ও রাশিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগ মেটানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতা অত্যন্ত জটিল হবে।

পশ্চিমের স্বীকৃতি ও পুতিনের অবস্থান

রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। যেখানে ক্রিমিয়া পুরোপুরি এবং ডনবাস অঞ্চলের ৮০ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত।

একজন রুশ কর্মকর্তা বলেছেন, পুতিন এমন একটি চুক্তিকে সাফল্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে পারেন, যা রুশ ভাষাভাষীদের সুরক্ষা এবং ক্রিমিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় স্থলপথ নিশ্চিত করবে।

তবে ক্রিমিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনও আলোচনা হবে না বলেই জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা।

সমাধানের সম্ভাব্য কাঠামো

২০২২ সালের এপ্রিল মাসে প্রায় চূড়ান্ত হওয়া একটি খসড়া চুক্তি সমাধানের ভিত্তি হতে পারে বলে ক্রেমলিন ইঙ্গিত দিয়েছে। এতে ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে যুদ্ধ বন্ধ করার প্রস্তাব ছিল।

তবে একজন রুশ কর্মকর্তা বলেছেন, চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমকে রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের আশঙ্কা থেকে মুক্ত রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন সংগৃহীত

  • ইউক্রেইন-রাশিয়া
  • ডোনাল্ড ট্রাম্প-ভ্লাদিমির পুতিন
  • যুদ্ধবিরতি
  • #