আওয়ামী লীগ সরকারের ৩ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসকদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে ২০১৪ সালে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনের সাথে জড়িত অতিউৎসাহী ইউএনও এবং সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, পেশাদারিত্ব ভুলে যারা দলীয় কর্মীর ভূমিকা পালন করেছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের সময়ের ৩ নির্বাচনই ছিল চরম বিতর্কিত। ২০১৪ সালের নির্বাচন ছিল একতরফা, ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে দেয়ার অভিযোগ আর সবশেষ ২০২৪ এর নির্বাচন পরিচিতি পায় ডামি নির্বাচন হিসেবে। আর এসব নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়া হয় স্বৈরশাসনকে। প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা আবার অতি উৎসাহী হয়ে নৌকার পক্ষে ভোটও চায় এসব নির্বাচনের আগে। যেটিকে প্রশাসনে নজিরবিহীন বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, আগের রাতে ভোট যদি নিতে হয়, ব্যালট বাক্সে ভোট যদি দিতে হয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ছাড়া কোনো ক্রমেই সম্ভব না।
এসব নির্বাচনে যেসব জেলা প্রশাসক দায়িত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিনাভোটে ১৫৩ টি আসনে জয়ী ঘোষণা করা হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। এর সাথে যে জেলা প্রশাসকরা জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোখলেস উর রহমান বলেন, ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি হয়েছে যেটা জঘণ্য অপরাধ হয়েছে। ১৫৩ সিটে কোনো নির্বাচন হয়নি। প্রিজাইডিং অফিসারের কলমের জোরে তাদের জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় যারা ডিসি ছিলেন তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হোক। কারণ অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা পদোন্নতির আশায় জনগণকে সার্ভিস দেওয়ার আশায় না বরং সরকারকে সার্ভিস দেওয়ার আশায় কাজ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।