শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুরে মুরশিদপুর খাজা বদরুদ্দোজা হায়দার ওরফে দোজা পীরের দরবারে হামলা, লুটপাট, দখলের জেরে এখনো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যেই পীরের ভক্তরা দরবার শরীফ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এর প্রতিবাদে দেওয়া হয় ব্যারিকেড। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসারের সদস্যরা অবস্থান করছেন।
ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ভোরে। ওই দিন দোজা পীরের দরবারে হামলা হয়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৩ জন আহত হয়। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে দরবারবিরোধী হাফেজ উদ্দিনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকালে মারা যান। এরপর থেকে সারা জেলায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার তাঁর জানাজা শেষে আবারও দরবারে হামলা হয়।
এবার পীরের ভক্তরা দরবার শরীফ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করার পর এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দরবার শরীফে যাওয়ার সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। শুক্রবারও দরবার শরীফের গাছপালা লুটপাট চলছে।
এ ঘটনার পর সুন্নতি তরিকতপন্থিরা লংমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করে। প্রতিরোধের ঘোষণা দেয় এলাকাবাসী। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে আজ লংমার্চ কর্মসূচি স্থগিত করে তরিকতপন্থিরা। তারপরও সবশেষ খবরে জানা যায়, পীরের বেশকিছু ভক্ত দরবারে অবস্থান নিয়েছেন। এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এমনটাই জানালেন ময়মনসিংহ ৩৯ বিজিবির পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদেরকে এখানে পাঠিয়েছেন। আমরা সে লক্ষেই কাজ করছি। দেশের যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা কাজ করি। এ এলাকার লোকজনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তারা আমাদেরকে কথা দিয়েছেন পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে ওনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই মুর্শিদপুর দরবার শরীফের কার্যক্রম বন্ধের হুমকি দিয়ে আসছিলেন সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের জামতলা এলাকার ফারাজিয়া আল আরাবিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার সুপার মো. তরিকুল ইসলামসহ স্থানীয়রা। এরই জেরে গত ২৬ নভেম্বর হামলা হয়।