আমেরিকার পরে রবিবার ব্রিটেনের এক সভায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ব্রিটেনে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা সেই সভার আয়োজন করেছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেই সভাতেই ভাষণ দিলেন হাসিনা। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ নিয়ে তিনি আঙুল তুললেন বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে। শেখ হাসিনা এ-ও দাবি করেছেন, তিনি কাউকে খুন করেননি। যাঁরা এখন খুন করছেন, তাঁদের বিচার এক দিন হবেই বলেই মন্তব্য করেন মুজিবুর-কন্যা।। এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, ‘অজ্ঞাতবাস’ কাটিয়ে তবে কি ধীরে ধীরে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন হাসিনা?
রবিবার আওয়ামী লীগের সভায় হাসিনা দাবি করেন, বাংলাদেশে এখন ‘অরাজকতা’ চলছে। নাগরিকদের কোনও শান্তি নেই সেখানে। তাঁর কথায়, ‘‘ঘরে শান্তিতে ঘুমোনোর উপায় নেই। চুরি, ডাকাতি হচ্ছে। যে কোনও সময় তদন্ত হতে পারে। এই তদন্তের নির্দেশ কে দিচ্ছেন?’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের এখন ‘ন্যায়বিচার’ চাওয়ার অধিকার নেই। আওয়ামী লীগের গণসংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্র লীগ’ হাসিনার এই বক্তৃতার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে দিয়েছে। যদিও ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট দেশত্যাগ করেছিলেন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে এখন বাংলাদেশ সামলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের। ব্রিটেনের সভায় নতুন এই অন্তর্বর্তী সরকারের দিকেই বার বার আঙুল তুলেছেন হাসিনা। তাঁর কথায়, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। অথচ এখন বন্যা, ঝড় গেল, কিন্তু তার পরে কেউ মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। আজ জনপ্রতিনিধিরা থাকলে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন।
গত অগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর হেনস্থা, নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। হাসিনা দাবি করেছেন, সরকারি কর্মীদের এই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে। ‘মিথ্যা মামলা’ থেকে রেহাই দিতে হবে। কাজে ফেরাতে হবে।
গতকাল ইস্ট লন্ডনের ইম্প্রেসন ভেন্যু হলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের আয়োজনে শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল এই সমাবেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা গেল আব্দুর রহমান, শফিকুর রহমান চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব ও কবির বিন আনোয়ারকে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান ফরিদপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। শফিকুর রহমান চৌধুরী সিলেট ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। হাবিবুর রহমান হাবিব সিলেট ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। জনপ্রশাসনের প্রভাবশালী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন কবির বিন আনোয়ার।