বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সংসদ-সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জনের রোষানলে পড়ে গচিহাটা কলেজের চাকরিতে ফিরতে পারছেন না সহকারী অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ। পরিবার-পরিজন নিয়ে কাটছে মানবেতর জীবন। প্রতিকার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি পান মো. আবুল মুনসুর। প্রভাষক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজে। ১৯৯৫ সালের ১ জুন কলেজটিতে যোগদানের পর ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর তিনি পদোন্নতি পান সহকারী অধ্যাপক পদে।
অভিযোগ রয়েছে, এক পর্যায়ে কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জনের রোষানলে পড়েন তিনি। মিথ্যা অভিযোগে প্রথমে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি ও পরবর্তীতে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ গভর্নিংবডি। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি অংশের বেতন শিট থেকেও মো. আবুল মুনসুরের নাম বাদ দেওয়া হয়।
কিন্তু ঢাকা বোর্ডের আপিল এন্ড আরবিট্রেশন কমিটির ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিলের সভায় মো. আবুল মুনসুরকে সমুদয় প্রাপ্য বেতন ভাতাসহ স্বপদে বহালের জন্য সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। কিন্তু কলেজ গভর্নিংবডি তাকে পুনর্বহাল না করে পুনরায় রিআপিল করলে বোর্ড পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। তবু দীর্ঘ ৯ বছর ধরে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি কলেজ গভর্নিংবডি।
চাকরিবিহীন অবস্থায় দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন মো. আবুল মুনসুর। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়ায় এরই মধ্যে তার স্ত্রী পর্যন্ত তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। এই সময়ে অন্যত্র চাকরি হলেও সেসব স্থানে যোগদান করার জন্য কলেজ থেকে অনুমতি পত্রও তাকে দেওয়া হয়নি।
এমনকি মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন তার লোকজন দিয়ে পিটিয়ে তার বাম হাত ও বাম পা অচল করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শরীরে বাসা বেঁধেছে নানা রোগব্যাধি। সংসারে রয়েছে অসুস্থ বৃদ্ধ মা ও প্রতিবন্ধী দুই বোন। তাদের জন্যও কিছু করতে পারছেন না তিনি।
মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন যুগান্তরকে বলেন, নারীঘটিত বিষয়ের কারণে তার বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। পরে ঢাকা বোর্ড তার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলে, এর বিরুদ্ধে আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি। সেখানে বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। যদি রায় তার পক্ষে আসে, তবে সে বেতনভাতাদি পাবে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।