আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে সিলেটে অপহরণ করে নিয়ে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত মিসবাহকে পরে বড় অংকের মুক্তিপণের বিনিময়ে উদ্ধার করে তার পরিবার। উদ্ধারের পর নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিরুদ্দেশ হয়েছেন মিসবাহ সিরাজ।
জানা গেছে, মিসবাহ উদ্দিন ৫ আগস্টের পর থেকে সুবিদবাজার এলাকায় একটি বাসায় আত্মগোপন করে ছিলেন। দিনের বেলা নিজ বাসায় থাকলেও রাতে ওই বাসায় থাকতেন তিনি। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতেও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ওই বাসায় ফিরছিলেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরের সুবিদবাজার এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে সাগরদিঘীর পার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পথিমধ্যে রাত সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকটি মোটরসাইকেলে এসে দুর্বৃত্তরা তার অটোরিকশার গতিরোধ করে। এরপর অস্ত্রের মুখে তাকে অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অটোরিকশায় তোলার সময়ও তাকে মারধর করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা মিসবাহ সিরাজের মোবাইল ফোন থেকেই তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অর্ধ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পরে পরিবারের লোকজন মুক্তিপণের টাকা দিয়ে ভোর রাত সাড়ে ৩টার দিকে নগরের সাগরদিঘীরপাড় এলাকার শ্মশানসংলগ্ন সড়কের পাশ থেকে মুহূর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে নগরের সোবহানীঘাটে আল হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে কত টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাকে উদ্ধার করা হয় সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মিসবাহকে অপহরণের পর তার হাতে ও পায়ে কুপানো হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ভোরে মিসবাহ উদ্দিনের অস্ত্রপচার হয়।
পরে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স যুগে অজানা গন্তব্যে তাকে নিয়ে চলে যায় তাঁর পরিবার। এরপর থেকে তার পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। যে কারণে প্রকৃত ঘটনা কি ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আগের রাতে ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি শুক্রবার দুপুরের পর থেকে জানাজানি হতে শুরু করে। তবে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, তার পরিবার ও স্বজনদের অনেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখায় প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেও নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি। পুলিশও এ বিষয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকেও এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের ওপর হামলা হয়েছে। কে বা কারা হামলা করেছে সেটা জানা যায়নি। তিনি আল হারামাইন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শুনেছি। পরে তিনি একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে চলে গেছেন। তবে কোথায় গেছেন জানা নেই। পুরো বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
তবে মিসবাহ সিরাজ যে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন সেটি নিশ্চিত করেছেন আল হারামাইন হাসপাতালের ভাইস চেয়ারম্যান অলিউর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে তিনি রাতে এসে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চলে গেছেন।