প্রতিবছর বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে যেত। বাঁশের সঙ্গে টানিয়ে পতাকা বিক্রির জন্য ঘুরে বেড়াত অনেককেই। এ পতাকা কিনে বাসে, রিকশায়, এমনকি অনেক বাড়ির ছাদেও টানাত অনেকেই। এবার বিজয় দিবসের দ্বারপ্রান্তে চলে এলেও রাজধানীতে পতাকা খুব একটা চোখে পড়ছে না। এমনকি হকার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন পতাকা বিক্রিতে ভাটার কথা।
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে পতাকা বিক্রেতা শিহাব বলেন, এ বছর পতাকার বিক্রি নেই। মানুষ কিনতে আসে না। কেন আসে না এইডা কইতে পারুম না। তবে ব্যবসা আর আগের মতো নেই। আগে ডিসেম্বর এলেই পতাকার জন্য ভিড় জমে যেত, এখন ক্রেতার অপেক্ষায় থাকতে হয়।
চকবাজারে পাইকারি পতাকা বিক্রেতা সাদুল বলেন, অন্যান্য বছর এই সময় কথা বলার সময় পাইতাম না। ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মাল বিক্রি হইতো। এখন নাই। এই যে দেখেন, ফেরিওয়ালারা বাকি মাল ফেরত দিতে আসছে।
রাজধানীর বাড্ডায় হেঁটে হেঁটে পতাকা বিক্রি করা জাহিদ জানান, এবার পতাকা কিনার মানুষ পাইতেছি না। সারা দিন ঘুরেও নিজের খরচের টাকাই উঠতেছে না, বাড়িত কী পাঠামু! এবার ঢাকা আইসা মনে হয় ধরা খাইলাম। ইনকাম নাই, দুপুরে খাওয়ার টাকাও উঠতেছে না, চিতই পিঠা খায়া পেট ভরাইতেছি।
পতাকা বিক্রি কম কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ক্যামনে কমু পতাকা ক্যান বিক্রি হইতেছে না। আগে বিজয় দিবসে মানুষ শক কইরা গাড়ি, বাড়ি, দোকান, অফিসে জাতীয় পতাকা টানাইতো। এইবার কয়টা গাড়ি-বাড়িতে জাতীয় পতাকা দেখছেন? আমার তো চোখে পড়তেছে না। ক্যান এমন হইতেছে বুঝতেছি না।
পতাকার পাইকারি বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, বিজয় দিবসে পতাকা নিয়ে সাধারণ মানুষের যে উচ্ছ্বাস থাকে, এবার তা নাই। রিকশাওয়ালা-ড্রাইভাররাও আবেগে ২০ টাকা দিয়ে একটা পতাকা কিনে গাড়ির সামনে লাগাইতো, এবার সেটা চোখ পড়তেছে না। আমার মনে হয় মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম কমতেছে।