লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে দলীয় কার্যালয়, বসতবাড়ি ও মোটরসাইকেল। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত থেকে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট ও বাবুরহাটে এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এতে শফিক রাঢ়ী, তাহমিনা বেগম, সানু বেগম, গণি রাঢ়ি, মিজান খাঁন, কবির হোসেন, বিল্লাল হোসেন ও জিহাদসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ ও রায়পুর উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শামীম গাজী গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপি জরুরী বৈঠক ডেকে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তদন্ত কমিটিতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সদস্য শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আহমেদসহ সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের জেলা কমিটির একজন করে প্রতিনিধি রাখা হয়। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
এদিকে খাসেরহাট বাজার ও আশপাশ এলাকায় বিএনপির দু’গ্রুপের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করছে। যেকোনো সময় ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন। তবে অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব জিএম শামিম বলেন, ফারুক কবিরাজের নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। তারা আমার মাছ লুট করে নিয়ে গেছে। আমার শ্বশুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ফারুক কবিরাজ বলেন, শামিমের নেতৃত্বে এলাকায় দখল ও চাঁদাবাজি চলছে।
আমাকে ভালো জানা নেতাকর্মীরা তাকে বাঁধা দিলে বিশৃঙ্খলা হয়। শামিমের লোকজন দফায় দফায় অস্ত্র নিয়ে বাজার প্রকাশ্যে মহড়া ও ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর করেছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা প্রতিবেদন জমা দেবেন। জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, সেনাবাহিনীসহ পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।