কাজের সন্ধানে সৌদি আরব গিয়ে পৃথক দুর্ঘটনায় ঝরে গেছে ময়মনসিংহের তিন যুবকের প্রাণ। এখন মরদেহ ফেরতের অপেক্ষায় দিন পার করছেন স্বজনরা। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহতরা হলেন ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা নিগুয়ারি ইউনিয়নের আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম (২৪), লংগাইর ইউনিয়নের খোকা মিয়ার ছেলে রিফাত (২১) এবং পাইথল ইউনিয়নের বদর উদ্দিন তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া (৩৮)।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম সৌদি আরবে দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিট অফিসারদের মাধ্যমে তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। মরদেহ আনার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে মদিনা শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইকরাম ও রিফাত। তাদের মধ্যে ইকরাম মদিনা শহরে সড়ক ক্লিনারের কাজ করতেন। অন্যদিকে গত ২২ ডিসেম্বর গাড়ির ওয়ার্কশপে বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন সুমন মিয়া। আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তির পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সুমন মিয়া ওই ওয়ার্কশপে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
ইকরামের বাবা আবু সাঈদ বলেন, এক বছর আগে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ইকরামকে সৌদি আরব পাঠিয়েছিলাম। মদিনা শহরে ইকরাম রাস্তা ক্লিনারের কাজ করতো। ঘটনার দিন সকালে কাজ শেষে গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলে। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য একটি গাড়ি ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে। তাদের জীবনটা ছন্নছাড়া হয়ে গেল।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন রিফাত। রিফাতের বাবা খোকা মিয়া বলেন পরিবারে অভাব গুছাতে ব্যাংক থেকে টাকা লোন করে এক বছর আগে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলাম। এখন তাকে হারিয়ে ফেলেছি। কীভাবে এই ঋণের টাকা শোধ করবো।
শোকের মাতম চলছে সৌদি প্রবাসী সুমনের বাড়িতে। সুমনের চাচা শাহিন মিয়া বলেন, প্রায় এক যুগ ধরে সুমন মদিনায় গাড়ির ওয়ার্কশপে কাজ করে আসছেন। গত ২২ ডিসেম্বর ওয়ার্কশপে কাজ সময় বিস্ফোরণে সুমনের মৃত্যু হয়। শেষ দুই বছর আগে বাড়িতে এসেছিল সুমন, এবার ফিরছে লাশ হয়ে।