সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ পাস বাতিল, মিডিয়া হাউজগুলোতে গিয়ে পেশি শক্তি প্রদর্শন, সাংবাদিকদের চাকরি থেকে অব্যহতি প্রদানের জন্য অন্যায্য চাপ প্রদান, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে, কয়েকটি গণমাধ্যমে আক্রমণ ও আক্রমণের হুমকি এবং সর্বোপরি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার প্রতিবাদে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম করেছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমান ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব কায়েম করার অপচেষ্টায় নিযুক্ত রয়েছে। এই সরকার কোনোভাবেই জনমনে স্বস্তি আনতে পারতেছে না। সরকারের বাইরেও তারা সরকারের অংশীজন সৃষ্টি করে রেখেছে। যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পেশি শক্তি প্রদর্শন বা মবসন্ত্রাসের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। সরকারের প্রচ্ছন্ন সমর্থনে ফ্যাসিবাদ কায়েমের এক নব রূপ হাজির করা হয়েছে। য়াদের এই দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে কথা বলতে পারত সাংবাদিক সমাজসহ বুদ্ধিজীবী শ্রেণি। সুতরাং ফ্যাসিস্ট এই সরকার প্রথম থেকেই তাঁদের কণ্ঠ রোধ করার জন্য হেন কোনো পন্থা নেই যেটা অবলম্বন করেনি। সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষক, বিচারপতি, শিল্পীসহ সকলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেছে। তাঁদের অনেককে গ্রেপ্তার করে কারান্তরীণ করে রেখেছে। যারা বাইরে আছে তাঁদেরকেও কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না, বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের কার্যালয়ে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আবার বিভিন্ন হাউজে গিয়ে প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে গিয়ে সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত করার জন্য চাপ প্রদান করা হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব ও সাংবাদিকদের উপর স্মরণকালের ভয়াবহতম অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে ইতিমধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরাম বা সংস্থা উদ্বেগ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, গতকাল একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের পাস বাতিল করা হয়েছে। এমন একটা সময়ে সেটা করা হয়েছে যখন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের ৭নম্বর ভবনে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অফিস ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এরই মধ্যে এই অগ্নিকাণ্ডের পূর্বাপরে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেছে। সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের পেছনের কারণ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জাতির সামনে পরিষ্কার হওয়া উচিত এবং দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু ঠিক এই সময়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ পাস বাতিলের সিদ্ধান্তকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখার যথেষ্ট অবকাশ আছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনের ঘটনাপ্রবাহ ধামাচাপা দিতে এবং তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টির পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এটা ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের ম্যাটিক্যুলাস ডিজাইনের অংশ কিনা সেটা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এটা নিয়ে সাংবাদিকেরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে জনগণের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা নির্মূল করতে পারত। সেই মূহুর্তে সরকারের এই ধরনের সিদ্ধান্তসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরকারের হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।