ছাত্রলীগের (অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক সদ্যনিষিদ্ধঘোষিত) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাধা প্রদান এবং নেতাকর্মীদের উপর দমন-পীড়ন ও অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিবৃতি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুকে আজ রবিবার এ বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিটি যথাসময়.কম-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, গতকাল (৪ জানুয়ারি) দিনটি ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ রচনায় অনবদ্য অবদান রাখা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ আত্মোৎসর্গকারী ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের পক্ষ থেকে পাহাড়সম বাধা-বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে সকল নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে সংগঠনের প্রতি গভীর আবেগ ও ভালোবাসা থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করেছে তাদেরকে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই অগণতান্ত্রিক সরকারের রক্তচক্ষুকে শুধু উপেক্ষা করা নয়, বরং তাদের ফ্যাসিবাদী স্পর্ধার বিরুদ্ধে প্রতিস্পর্ধার নাম হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। দেশের মানুষের জান-মালকে অনিরাপদ করে তোলা, মানবাধিকার হরণকারী কর্তৃত্ববাদী এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানবিকতা ও গণতন্ত্রের ধারক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে যে সাহসিকতা নিয়ে লড়াই করেছে তা তাদের পূর্বসূরিদের লড়াই-সংগ্রাম ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। ছাত্রলীগ বরাবরের ন্যায় আবারও প্রমাণ করেছে তারা কোনো অশুভ শক্তির নিকট পরাজয় স্বীকার করে না, কোনো পরাভব মানে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমন মন্ত্রে দীক্ষিত যেটার বলে তারা যে কোনো দানবীয় শক্তিকে দুমড়ে-মুচড়ে দিতে পারে। সেই ভয় থেকেই এই অবৈধ অসাংবিধানিক দখলদার সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ও বেআইনিভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। অবৈধ অগণতান্ত্রিক সরকারের এই অবৈধ নিষেধাজ্ঞাই যেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চেতনার বারুদে অগ্নিস্পর্শ ঘটায়। এই অবৈধ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের প্রতি ইঞ্চিতে নিজেদের অবস্থানের জানান দেয়। ফ্যাসিবাদী এই সরকার দমন-পীড়নের অভিনব কৌশল আবিষ্কারের মাধ্যমে যত বেশি কণ্ঠরোধ করতে চায়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ততই প্রতিবাদী ও প্রতিরোধী হয়ে ওঠে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কর্মসূচি নস্যাৎ করার লক্ষ্যে সরকার নির্বিচারে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে। বেআইনিভাবে ছাত্রলীগের সহস্রাধিক নিরপরাধ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, শতাধিক স্থানে হামলা চালানো হয়েছে যাতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আহত হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য জায়গায় কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হয়েছে। তারপরও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বেআইনিভাবে গ্রেফতার ও এসকল অগণতান্ত্রিক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণের চিন্তা-চেতনার বাতিঘরে প্রজ্জ্বলিত দীপশিখা। অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস ও তার নেতৃত্বে পরিচালিত দেশবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপর দমন-পীড়ন ও হামলা চালিয়ে তা নিভিয়ে দিতে চায়। কিন্তু এই অশুভ দানবীয় শক্তি জানেনা যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অসম সাহসিকতা, বীরত্ব ও অকুতোভয় রক্তের স্রোতধারার উত্তরাধিকার বহনকারী সংগঠন। দেশমাতৃকার প্রয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জীবন দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। দেশপ্রেম ও লড়াই-সাংগ্রামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এক, অদ্বিতীয় ও অপ্রতিরোধ্য। আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি, এই অবৈধ অসাংবিধানিক দখলদার ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও ন্যায্যতার প্রশ্নে আপসহীন লড়াই চলমান রেখে বরাবরের ন্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সমগ্র জাতিকে পথ দেখাবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।