জাতীয় নাগরিক কমিটিতে শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে

জুলাই বিপ্লবের পর গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য হয়েছেন শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ জন কর্মকর্তা। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের কমিটির সদস্য পদ গ্রহণ করতে পারেন কি না, এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ১৬ হাজার সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার কেউ কেউ সরাসরি ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

তবে কমিটিতে স্থান পাওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, নাগরিক কমিটি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, একটি প্ল্যাটফর্ম। যখন সেটি রাজনৈতিক দল বা সংগঠনে পরিণত হবে, তখন তারা পদত্যাগ করবেন।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ঘোষিত কমিটিতে এমনটা দেখা যায়।

শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা ড. সদরুদ্দিন আহমদ, ড. মো. আতিয়ার রহমান, মো. গোলাম আজম, ড. আজিজুল হক খান, মো. আব্দুল্লাহ মাসুদ, মো. মিজানুল হক, মো. মানিবুর রহমান মিয়া, মোহাম্মদ আলী হোসেন মোল্লা, আবদুল মালেক, কামাল আহমেদ, জাহিদ সোহেল ও মোহাম্মদ আরিফুর রহমান মজুমদারসহ বিসিএস ১৬ ব্যাচ থেকে ৪০তম ব্যাচের ১৩৪ জন কর্মকর্তা এই প্রতিনিধি কমিটিতে রয়েছেন।

শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই; যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা-ও-আপিল) বিধিমালার পরিপন্থি।

সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, সরকারি চাকরিজীবীরা যেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত বা রাজনৈতিক কথা না বলতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন। আমলারাই আমলাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। অথচ কাক কিন্তু কাকের মাংস খায় না।

শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

এদিকে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলায়-জেলায় কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা জাতীয় নাগরিক কমিটি বলছে, তারা অরাজনৈতিক সংগঠন। ফলে তাদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকার আইনি ও নৈতিক কোনো বাধা নেই।

শিক্ষা ক্যাডারের একজন অধ্যাপক বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের যেসব কর্মকর্তা বৈষম্য ও ফ্যাসিস্ট শব্দগুলো কথায় কথায় আজ ব্যবহার করছেন, তারাই বিগত সরকারের কাছের মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় মগ্ন ছিলেন। এসব নেতা বদলি ও পদায়নের জন্য এসব কমিটিতে নাম লিখিয়েছেন। মূলত এসব নব্য চেতনাবাজ নেতাদের মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ভালো পদায়ন। জুলাই বিপ্লবের পর শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ সংখ্যক কর্মকর্তার বদলি হয়েছে।

প্রবীণ এই অধ্যাপক আক্ষেপ করে বলেন, বদলির ধরন দেখে মনে হচ্ছে সব ক্যাডারের রাজা শিক্ষা ক্যাডার। বিগত সরকারের ভোট চুরি শুধু এরাই করেছে। এসব সুবিধাবাদী প্ল্যাটফর্ম আমি চাই না।

শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৪ কর্মকর্তা

সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে এই কমিটিতে স্থান পাওয়া ব্যক্তিরা নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনে সমর্থ হবেন কি না, জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি যেহেতু অরাজনৈতিক সংগঠন। এতে যুক্ত হওয়ায় আইনি ও নৈতিক কোনো বাধা নেই। যারা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মধ্য থেকে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে, তাদের নাগরিক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি কলেজের শিক্ষকরাই নন, আমলাদের কেউ কেউ ছিলেন। সামরিক বাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্তদের অনেকেই নানাভাবে সক্রিয় ছিলেন। তারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে সোচ্চার থাকবেন, এটুকুই।

#