নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বরিশাল রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে ১৫টি রুটে বাস ধর্মঘট শুরু করেছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এতে বরিশাল থেকে দক্ষিণের জেলাগুলোর বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীরা মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েছেন। আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করে পরিবহন-মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
গতকাল মঙ্গলবার নগরের রূপাতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে বাসশ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এ খবর পেয়ে বিকেলে কলেজের শিক্ষার্থীরা সেখানে যান এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি বাসে ভাঙচুরের চালান বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকেরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গতকাল দুপুরে ব্রজমোহন কলেজের এক ছাত্রী ঝালকাঠি থেকে তাওহিদ ক্ল্যাসিক পরিবহন নামের একটি বাসে বরিশালে আসছিলেন। তিনি শিক্ষার্থী হাওয়ায় অর্ধেক ভাড়া নিতে বললে বাসচালকের সহকারী তার সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ান এবং একপর্যায়ে ওই ছাত্রীকে মাঝপথে নামিয়ে দেন। পরে কলেজের কয়েকজন ছাত্রপ্রতিনিধি বিষয়টি মীমাংসার জন্য রূপাতলী গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাসটি ভাঙচুর করেন এবং সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বাস ধর্মঘটের কারণে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে যানবাহনের ভিড় নেই। যাত্রীরা পড়েছেন মারাত্মক দুর্ভোগে। তাই তিন চাকার বিভিন্ন যানে অতিরিক্ত ভাড়ায় গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে।
আজ সকালে বাস টার্মিনালের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, বাস ভাঙচুরের সময় তাদের মারধর করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তারা এ ধর্মঘট শুরু করেছেন। তারা বলেন, তাদের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। বিভিন্ন সময় তাদের মারধর করা, বাস ভাঙচুর করা হচ্ছে। এভাবে সড়কে বাস চালানো আতঙ্কের। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন দূরদূরান্তের যাত্রীরা। আজ সকাল থেকে বাসস্ট্যান্ডে এসে বাস না পাওয়ায় বিকল্প যানে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের। আর এ সুযোগে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সিএনজি, মাহিন্দ্রা ও অটোচালকদের বিরুদ্ধে। যাত্রীরা বলছেন, বাস বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। দ্রুত বিষয়টি সমাধান না করলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।