পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত চত্বরে বেশ কয়েকজন আসামির ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির প্রধান গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আসামিদের ওপর এই হামলা হয় বলে অভিযোগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় অংশ নেয়া সবাই পটুয়াখালী বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। এ ছাড়া হামলায় সরাসরি দুই জন আইনজীবী অংশ নিয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
হামলায় আহতরা হলেন মো. সোহাগ, সোহাগ মিয়া এবং মো. জামাল। এদের মধ্যে সোহাগ মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তিনি সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদারের ভাতিজা এবং কলাপাড়া নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়ার ছোট ভাই।
এদিকে হামলার সময় উপস্থিত স্থানীয়রা ছবি এবং ভিডিও ধারণ করতে গেলে হামলাকারীরা জোরপূর্বক হামলার ছবি এবং ভিডিও ডিলেট করতে বাধ্য করেন।
হামলায় গুরুত্বর আহত সোহাগ মিয়ার বড় ভাই আল আমিন জানান, ২০১২ সালে কলাপাড়ায় ছাত্রদল নেতা মো. জিয়া নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী একটি মামলা করা হয়। সেই মামলার আসামিরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বুধবার পটুয়াখালী আদালতে হাজিরা দিতে আসলে মামলার বাদীসহ পটুয়াখালী বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা করে। এ সময় তারা ইট দিয়ে আঘাত করে সোহাগ এর হাটু থেতলে দেয় এবং বাকিদের ব্যাপক মারধর করে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসার পরও আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাদের ১০ থেকে ১২ জনকে মারধর করে আহত করা হয়েছে। আহত করার পর তাদের কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে বসাকবাজার এলাকায় ছেড়ে দেয় হয়। হামলাকারীরা তাদের চিকিৎসা পর্যন্ত করতে দেয়নি। আদালতের মত জায়গায়ও মানুষের নিরাপত্তা নাই।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদ সরওয়ার কালাম বলেন, আদালত চত্বরে এ ধরনের ঘটনা আইনজীবীদের জন্য দুঃখজনক। এ বিষয়ে সকলের প্রতিবাদ করা উচিত। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, সাংবাদিকদের সাহসী হতে হবে, সত্য তুলে ধরতে হবে।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, আদালত চত্বরে হামলার সংবাদ শুনে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে এ বিষয় আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। শুনেছি আহতরা কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।