দেশের ভ্রমণপিয়াসু পর্যটকদের জন্য সেন্টমার্টিন ভ্রমণ আগামী ৯ মাসের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) পর্যন্ত দ্বীপটিতে ভ্রমণে যেতে পারবেন পর্যটকেরা। এরপর শনিবার থেকে আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত সেন্টমার্টিন ভ্রমণ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই দুই মাস দৈনিক দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ ও সেখানে রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছেন। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কোনো পর্যটকের সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন না। তবে স্থানীয়রা সরকারকে পর্যটকদের সার্বক্ষণিক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। আরও এক মাস এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জমির উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের ভ্রমণে নির্দেশনায় এখনও কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রতি বছর নভেম্বর থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াত শুরু হবে। শেষ হবে ৩১ জানুয়ারি। এর মধ্যে নভেম্বর মাসে রাতযাপন করতে পারবেন না পর্যটকরা। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ সুরক্ষায় সরকার এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যটক যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু এ বছর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণালয় থেকে পর্যটক সীমিতকরণসহ নানা বিধি-নিষেধ জারি হয়। যেখানে নভেম্বর মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবে কিন্ত রাত্রিযাপন করতে পারবে না এমন সিদ্ধান্ত আসে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ২ হাজার পর্যটক যেতে পারবে ও রাত্রিযাপন করতে পারবে আর ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না এসব বলা হয়। এতে সেন্টমার্টিনের ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান তারা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে ১০ হাজারের অধিক মানুষের জীবিকা পর্যটনের ওপর নির্ভর করে। জাহাজ চলাচল ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো গেলে বাসিন্দাদের কিছুটা উপকার হত।
প্রসঙ্গত, পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে ১২টি জাহাজ যাতায়াত করে আসছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন, ইনানী-সেন্টমার্টিন, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন- এই চারটি নৌপথ দিয়ে এত দিন জাহাজ চলাচল করে আসছিল। এর মধ্যে বর্তমানে শুধু কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল করছে।