রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাতটি আবাসিক হলে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, ওই কোরআন পোড়ানোর ঘটনার মূল হোতা এই শিক্ষার্থী। তাঁকে ময়মনসিংহ থেকে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই শিক্ষার্থীর নাম ফেরদৌস রহমান ফরিদ (২২)। তিনি রাবির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নে।
কোরআনে আগুন দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে পালিয়ে যান এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে থাকেন। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, গত ১২ জানুয়ারি রাবির শহীদ আমির আলী হলের মুক্তমঞ্চ, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল, মাদার বখস হল, মতিহার হল, সোহরাওয়ার্দী হল, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হলের মসজিদের মেঝেতে ও শেলফে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআন শরিফের এমন অবমাননার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মপ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মতিহার থানায় একটি মামলা করে।
আরএমপির মতিহার থানা-পুলিশের পাশাপাশি সিটিটিসি এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিট মামলাটির তদন্ত শুরু করে। এর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থানের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন শরিফ পোড়ানোর ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।
আরএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, মঙ্গলবার ওই শিক্ষার্থীকে ময়মনসিংহের তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাঁকে রাজশাহী আনা হয়। পুলিশ হেফাজতে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
রাবির হল থেকে পোড়া কোরআন উদ্ধার, তদন্তে কমিটিরাবির হল থেকে পোড়া কোরআন উদ্ধার, তদন্তে কমিটি
সাবিনা ইয়াসমিন আরও জানান, ওই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন, তিনি মানসিকভাবে ‘বিক্ষুব্ধ’ এবং এ কারণে পবিত্র কোরআন শরিফে আগুন দেন। তিনি একাই এ কাজটি করেছেন। তাঁর বক্তব্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ওই শিক্ষার্থীর কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি যোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।