ঘাটাইলে শিক্ষা সফরগামী চার স্কুলবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাতরা লুট করার পাশাপাশি তিন স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, ময়মনসিংহ বিভাগের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সোয়াইতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা সফরের জন্য চারটি বাস নিয়ে নাটোরের গ্রীনভ্যালি পার্কের উদ্দেশে রওনা দেন। ভোর সাড়ে চারটার দিকে বাস চারটি ঘাটাইল উপজেলার সাগরদীঘি ইউনিয়নের লক্ষণের বাধা এলাকায় পৌঁছালে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাসে থাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট শুরু করে।
ডাকাতিতে বাধা দেয়ায় ডাকাতদের মারধরের শিকার হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার। এ সময় তিন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও জানিয়েছেন বাসে থাকা এক অভিভাবক।
তিনি জানান, রাতের বেলা বাস চলছে দ্রুত গতিতে। হঠাৎ তিনিসহ অন্যরা খেয়াল করেন সড়কের মাঝে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয়েছে। তিনি বুঝে ফেলেন এটি ডাকাতদের কাজ। সতর্ক করেন সবাইকে। বন্ধ করে দেওয়া হয় গাড়ির জানালা এবং গেইট। কিছু বুঝে উঠার আগেই ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঘাত শুরু করে গাড়িতে। ডাকাতরা পেছনের গাড়ি থেকে তাদের মালামাল লুট করা শুরু করে। এসময় তিন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানিও করা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান জানান, ডাকাতরা নগদ দেড় লাখ টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণ, ১০টি স্মার্টফোন নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হয়েছেন ওই বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাখাওয়াত হোসাইন রবিন (২৫) ও অভিভাবক শহিদুল্লাহ তালুকদার (৩৯)।
সাখাওয়াত হোসাইন রবিন বলেন, আমি ছিলাম দুই নম্বর বাসে। ওই বাসে ছিল শুধু ছাত্রী। ডাকাতরা আমার কাছে থেকে মোবাইল নেওয়ার পর যখন ছাত্রীদের দিকে যাচ্ছিল তখন আমি বাধা দেই। এর ফলে তারা আমাকে মারপিট করে।
ডাকাতদের অস্ত্র দেখে গাড়িতে জ্ঞান হারান কৃষি বিষয়ের শিক্ষক আবুল কালাম (৫২)। সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিনথিয়া আক্তার জানায়, ভয়ে সে অনেক কেঁদেছে। এখনও তার ভয় দূর হয়নি।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, মোট ১৮০ জন যাত্রী নিয়ে চারটি বাস নাটোর যাওয়ার সময় ঘাটাইলে ডাকাতির কবলে পড়ে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাসও দেন তিনি।