যশোরের মনিরামপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক শাহিন আলমকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন ইউএনও নিশাত তামান্না ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুমসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মারধরের শিকার শাহীন আলম বলেন, গত বুধবার বিকালে অফিসের সামনের শহিদ মিনারে দাঁড়িয়ে সহকর্মী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে গল্প করছিলাম। এ সময় ফোনে কল করে কথা বলছিলেন রিয়াদ। একপর্যায় সাইফুল বলে উঠেন- শাহীন আমার সামনে আছে। তখন রিয়াদ আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাইফুল আমাকে ফোন ধরিয়ে দেন। আমি ফোন ধরতেই রিয়াদ আমাকে গালমন্দ করতে থাকে। আমি প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দিয়ে সে আমার অবস্থান জানতে চায়। আমি অফিসের সামনে থাকার কথা বললে ফোন কেটে দিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ২০-২৫ জনকে নিয়ে রিয়াদ আমাদের কাছে আসেন। এরপর রিয়াদের উপস্থিতিতে আমাকে মারপিট করা হয়।
তিনি বলেন, আমি ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির থানা সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান মিন্টুকে মোবাইল ফোনে জানাই। এরপর তারা চলে যায়। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি ইউএনও স্যারকেও বলেছি। স্যার জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছেন। আমাকে মোবাইলে রিয়াদ বলছিল— ‘অফিসে বসে দালালি করিস। তোর হাত পা ভেঙে দেব। কেন সে এসব কথা বলেছে তা বুঝে উঠতে পারছি না।
শাহীন আরও বলেন, এ ঘটনা জানাজানি হলে রাতে থানা বিএনপির সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ইউএনও স্যারের বাসায় এসে দেখা করেন। এরপর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, আসাদুজ্জামান মিন্টু ও রিয়াদ আমার কাছে এসে ভুল স্বীকার করেছেন। আমি তাদের বলেছি- বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেনেছেন। এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মনিরামপুর থানা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, শাহীন আলমের সঙ্গে ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার সঙ্গে মোবাইলে কোনো কথাই হয়নি। অভিযোগটি তার মনগড়া হতে পারে।
মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু জানান, রিয়াদের সঙ্গে ইউএনও দপ্তরের শাহীনের কথা কাটাকাটি হয়েছে। একপর্যায়ে অন্য একজন শাহীনকে একটা চড় মারে। এ বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে আমার দুই দফা কথা হয়েছে। আমি রিয়াদ ও শাহীনের মধ্যে সমঝোতা করে দিয়েছি।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না জানান, বিএনপির কয়েকজন আমার কাছে এসেছিল। শাহীনকে ফিজিক্যালি অ্যাসাল্ট করা হয়েছে। আমি বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানিয়েছি। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
নিশাত তামান্না বলেন, শাহীনকে মারপিটের ঘটনায় আমরা উপজেলা পরিষদে কর্মরত সবাই একত্রিত হয়ে প্রতিবাদসভা করেছি। আমরা হয়রানিমুক্ত সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ চাই। আমরা এখনো মামলায় যাইনি। ডিসি স্যারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি একটা সিদ্ধান্ত আসবে।