গভীর রাতে ট্রেন থেকে নামিয়ে কয়েকবার ধর্ষণের পর তরুণীকে হত্যা করে রেল লাইনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় খুনি। মৃতদেহের উপর দিয়ে ট্রেন চলে গেলে লাশ ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করলে তার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
খুনি শুধু ধর্ষণই করেনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে যৌনাঙ্গ, স্তন কেটে ফেলে। মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা নিশ্চিত করে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন হত্যাকারী রিফাত বিন সাজ্জাদ (২৩)।
তরুণীকে হত্যার পর ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন খুনি সাজ্জাত। এদিকে পুলিশ হন্যে হয়ে হত্যার সূত্র খুঁজে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু রাতের আধারে একটি ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পরে সাজ্জাদ। পরে তার মোবাইলে ধারন করা একজন তরুণীকে বেঁধে রাখার ভিডিও চোখে পড়ে জনতার। এই ভিডিওর সূত্র ধরেই বেরিয়ে আসে তরুণী হত্যার চাঞ্চল্যকর রহস্য।
সোমবার পঞ্চগড় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী। আসামি রিফাত বিন সাজ্জাদের বাড়ি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাঝগ্রামে। সে ওই এলাকার আকতার হোসেনের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, গত ১৪ জানুয়ারি জেলার আটোয়ারী উপজেলার কিসমত এলাকায় রেললাইনে একটি অজ্ঞাত নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। হত্যাকাণ্ড হলেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারছিলো না পুলিশ। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঠাকুরগাঁয়ের ভুল্লি এলাকার একটি পরিবার তাদের মেয়ে মনে করে মরদেহ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন করেন।
হত্যাকাণ্ডের পরও আসামি সাজ্জাদ একের পর অপরাধকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। গত পরশু (৮ মার্চ) দিবাগত রাতে আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর এলাকার তাহিরুল ইসলামের বাড়িতে ইজিবাইক চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে সাজ্জাদ। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উত্তম মাধ্যম দেয়। এ সময় তার মোবাইলে একটি নারীকে বেধে রাখার ভিডিও দেখতে পায় তারা। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে অজ্ঞাত ওই নারীকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। সে জানায়, তার মাকে নিয়ে গালি দেয়ায় তাকে প্রথমে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। পরে যৌনাঙ্গ, স্তনসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়। তারপর মরদেহ ফেলে দেয়া হয় রেললাইনে।
তার বিরুদ্ধে আটোয়ারী থানায় ধর্ষণের পর হত্যা ও চুরির দুটি মামলা হয়েছে। এরপর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই নারীর এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। আমরা তার পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তবে তাকে নৃশংসভাবে হত্যার সাথে জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দিনাজপুর থেকে একতা এক্সপ্রেসে পঞ্চগড়ে আসার পথে ওই নারীর সাথে আসামির পরিচয় হয়।